ভালোবাসা শব্দটি মহান ও পবিত্র। ভালোবাসা হলে পৃথিবীর নিয়ম-কানুন কোন কিছুই মনে থাকে না। তখন হাজারো অনিয়মের পূজা করা যায়। এখনো ভালোবাসার কথা শুনলে গায়ের পশম খাড়া হয়ে উঠে। থেমে যাই আমি। লেখাপড়া করেও শুধু ভালোবাসার কারণে সাধারণ ঘরের একটা অজ্ঞ, নিম্ন মনমানসিকতার, লোভী, ছলনাময়ী মেয়েকে ভালোবেসে মানসিক দিক থেকে সুখী ছিলাম আমি। বিশ্বাস করুন এ প্রেম পেলে এ ভবে আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। হঠাৎ কী হতে কি হয়ে গেল, কোথায় থেকে এসে কোথায় থেমেছি আমি। আমার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক পজিশন ছিল। আজ সবকিছু শিথিল করে রেখেছি। কেউ ভাবে আমি দুর্বল, কেউ ভাবে আমি হেরে গেছি। সব কাজকর্ম আজ স্থির হয়ে গেছে। যার জন্য এতকিছু, সে এখন সুখী। নতুন স্বামী, নতুন সংসার। কাকে দোষারোপ করবো আমি। জানি না কেন বিধাতা এমন ভাগ্যচক্রে আমায় নিয়ে খেলা করেছেন। আমার ভালোবাসায় বাধা ছিল সামাজিক কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস, অজ্ঞতা, নীচুতা, মূর্খতা, শত্রুতা ইত্যাদি। মুসলমান হয়ে হিন্দু মেয়েকে ভালোবাসা এবং এর মিলন ঘটানোর চেষ্টা করা গ্রাম্য সমাজের রীতি অনুযায়ী মহাপাপও বটে। নানা রকম পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সীমাবদ্ধতার মাঝেও সে মেয়েটা আমাকে ভালোবাসার চেষ্টা করেছে, এমন ভাব দেখাতো, কিন্তু বিশ্বাস করার মতো এমন কোন পরিস্থিতি কখনো ঘটেনি। চোখের সামনে সে হাসতো পরপুরুষের সাথে, একদিন নয় বহুদিন; একবার নয় বহুবার। শেষ পর্যন্ত সে ভালোবাসার মিলন সম্ভব হয়নি। এতে তার কোন দোষ নেই, একজনের সুখের চেয়ে বহুজনের সুখ বড়, এভাবেই বলতে চেয়েছিল সে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বলেনি। আমাদের ভালোবাসাটা গোপন ছিল। তাছাড়া ভালোবাসলেও আমরা জানতাম, এ মিলন সম্ভব নয়। এতে দু’জনের কেউই সুখী নয়, এমন ভাবনা আমার মনে, তার ভাবনাটা আজও আমি জানতে পারিনি। তাইতো তার কাছে বিনয় করে জানার ইচ্ছে পাঠকের মাধ্যমে, এ জন্য উপন্যাস লেখার মানসিক কষ্ট সহ্য করা। মনের কষ্টগুলো বুকের ভিতর চাপা দিয়ে নিজেকে অনেক বুঝিয়ে-সুজিয়ে কেন যে নীরব ভালোবাসার বিরহ নিয়ে পাঠককে জানানোর চেষ্টা করা। হায়রে নির্মম ভালোবাসা। “ভুলটা কী ছিল?” এটা আমার প্রথম প্রেমের বিরহমূলক বাস্তব ঘটনার উপর লিখিত উপন্যাস। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাংলা সাহিত্যের সব শাখার বই-ই বের হবে। পাঠকদের উৎসর্গ করলাম আমার প্রথম উপন্যাস, কারণ আমার মতে পাঠক হলো শ্রেষ্ঠ বিচারক। পাঠক যদি বই না পড়ে লেখক তাহলে মৃত কিংবা মূল্যহীন। সত্যিকার প্রেমের বিরহে পড়ে ভেবেছি, কোনো লেখাই বের করবো না। পরে পাঁচ বছরের ছোট একটা মেয়ের কথা শুনে ভাবনাটা পরিবর্তন করলাম। সে বলেছিলো, না বের করলে, সারাদিন কেন এত লিখেন? অবুঝ মেয়ে তিথি কিন্তু তার কথাটা আমায় বিস্মিত করেছে। ভেবেছি দিন-রাত সমাধান, লেখা বের করার সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছু পাইনি। উপন্যাস পড়ে যদি মনে হয়। আপনার কিছু জানতে খুব বেশি আগ্রহ জমেছে, অবশ্যই যোগাযোগ করবেন। যারা পাঠককে অবহেলা করে, তারা অজ্ঞ ও অহংকারী। পাঠক আমার লেখালেখির জীবনে সবসময়ই সম-গুরুত্ব বহন করে। সবাই ভালো থাকুক, আমার শুভ কামনা।