প্রথম গল্পেই দেখা যায় মরণ আর প্রেমের কুহক। মধ্যবিত্তের তবে পরকীয়ার বালাই আছে। এমনকি মৃত্যুর সামনে দাঁড়ায়েও জীবনের তরে সে কোনো অবৈধ পথের খোঁজ করে। জিহ্বায় এমন তেঁতুলের স্বাদ লেগে আছে যে, জীবনটা তারে বেচইন করে তোলে। পাওয়া আর হারানোর ভেদ বিচার তার আওতার বাইরে চলে যায়। এসব বিষয়ের কোনো মুসাবিদা করতেই শেরিফ আল সায়ার সাহিত্যকর্মে নামেন নাই, বোধ করি। যদিও তার প্রথম গল্পের বই মধ্যবিত্তের নানা মুশকিল হাজির করে। দেনা-পাওনার সংসারে আপন ঘরের খোঁজ নিতে ব্যস্ত মধ্যবিত্তের জীবনে অজানার আসর থাকে; সে অজানার দরবারে কামিয়াব হওয়ার আশায় করজোড়ে যে গ্রন্থখানা লিখেছেন শেরিফ, তার নাম ‘কয়েকটি অপেক্ষার গল্প’। মোট দশটি গল্প আছে এ গ্রন্থে। গল্প শেষ করার প্রবণতা কম শেরিফের। পাঠক যেন তার আত্মীয়। পাঠকই বুঝে নেবে, তারা আসলে নিজেদের গল্প পড়ছেন। মিষ্টগদ্যে সিধা কাহিনির জটিল আবেগ, এ পথেই হেঁটেছেন লেখক। গল্পে মৃত্যুর দিকে জিজ্ঞাসার আঙুল তুলেছেন শেরিফ। রয়েছে আবেগ আর সংসারের কাহন। রয়েছে বেদনার জ্ঞান অর্জন আর প্রাপ্তির ক্ষরণ। যা-কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তা হারায় গল্পের চরিত্রেরা। আর যা কিছু পায় তারা, তখন আবার দিশা যায় হারায়ে। এমন জীবনের তালাশে নেমেছেন লেখক। মধ্যবিত্ত ঘরে থাকতে চায় না, আবার বাহির তার আপনার হয় না। ঘর-বাহিরহীন মধ্যবিত্ত সংকট উতরায়ে যাবে কোন বলে। লেখকের স্বরে সেই জিজ্ঞাসা-রাজনীতির খোঁজে তার গল্পের চরিত্র একদিন ঢাকা শহরে হেঁটে বেড়ায়। রাজনীতির মর্গে অনেক অপরিচিতি। চেনা সময়ের অলিগলি খুঁজে লেখক বুঝে নিয়েছেন, লাইফ ইজ অ্যাবসার্ড।
"জন্ম ১৯৮৭ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকায়। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার বদরপুর গ্রামে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকায়। এসএসসি এবং এইচএসসি’র পর ২০১০ সালে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) থেকে ইলেকট্রনিক অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং ২০১৩ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। বর্তমানে জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের গবেষণা বিভাগের ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত আছেন।
লেখকের প্রকাশিত বই: কয়েকটি অপেক্ষার গল্প (প্রকাশকাল: ২০১২) শাহবাগের জনতা (প্রকাশকাল: ২০১৫) এই ঘরে কোনো খুনি নেই (প্রকাশকাল: ২০১৬)"