মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা গল্প-উপন্যাস দেখলেই আমি সেটা পড়ে দেখি-তবে সব সময়েই সেগুলো পড়ে যে আমি তৃপ্তি পাই তা নয়। মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়টি ছিল বহুমাত্রিক এবং একটি অবিশ্বাস্য সময়। সেই সময় আমরা মানুষের সবচেয়ে বড় নিষ্ঠুরতা দেখেছি, আবার একই সাথে একেবারে সাধারণ মানুষের ভেতর অন্য মানুষের জন্য ভালোবাসার বান ডেকে যেতে দেখেছি। মানব চরিত্রের এত বৈপরীত্য অন্য কখনো এভাবে প্রকাশ পেয়েছে বলে আমার জানা নেই। তাই যারা মুক্তিযুদ্ধকে সত্যিকারভাবে অনুভব করেন নি, তারা যদি সেই সময়টিকে কাগজের ক্যানভাসে ধরে রাখতে চান সেটি অনেক সময়েই হয়ে যায় অতিরঞ্জিত বা অতিরিক্ত আবেগমাখা। ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর বেলায় সেটা ঘটে নি। তার কারণ তিনি একাত্তরকে দেখেছেন এবং অনুভব করেছেন এবং সেই একাত্তরকে পাঠকের সামনে তুলে ধরার মতো ক্ষমতা তাঁর আছে। তাই আমি যখন ঈদসংখ্যা 'অন্যদিন'-এ ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর 'উনিশ শ' একাত্তর' উপন্যাসটি পড়েছিলাম, আমি তাঁর সাথে যোগাযোগ করে আমার ভালোলাগার কথাটুকু তাঁকে জানিয়েছিলাম। সেই কাজটুকু সহজ ছিল কিন্তু এখন যখন আমি সেই উপন্যাসটি নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি, আমি বুঝতেমুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা গল্প-উপন্যাস দেখলেই আমি সেটা পড়ে দেখি-তবে সব সময়েই সেগুলো পড়ে যে আমি তৃপ্তি পাই তা নয়। মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়টি ছিল বহুমাত্রিক এবং একটি অবিশ্বাস্য সময়। সেই সময় আমরা মানুষের সবচেয়ে বড় নিষ্ঠুরতা দেখেছি, আবার একই সাথে একেবারে সাধারণ মানুষের ভেতর অন্য মানুষের জন্য ভালোবাসার বান ডেকে যেতে দেখেছি। মানব চরিত্রের এত বৈপরীত্য অন্য কখনো এভাবে প্রকাশ পেয়েছে বলে আমার জানা নেই। তাই যারা মুক্তিযুদ্ধকে সত্যিকারভাবে অনুভব করেন নি, তারা যদি সেই সময়টিকে কাগজের ক্যানভাসে ধরে রাখতে চান সেটি অনেক সময়েই হয়ে যায় অতিরঞ্জিত বা অতিরিক্ত আবেগমাখা। ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর বেলায় সেটা ঘটে নি। তার কারণ তিনি একাত্তরকে দেখেছেন এবং অনুভব করেছেন এবং সেই একাত্তরকে পাঠকের সামনে তুলে ধরার মতো ক্ষমতা তাঁর আছে। তাই আমি যখন ঈদসংখ্যা 'অন্যদিন'-এ ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর 'উনিশ শ' একাত্তর' উপন্যাসটি পড়েছিলাম, আমি তাঁর সাথে যোগাযোগ করে আমার ভালোলাগার কথাটুকু তাঁকে জানিয়েছিলাম। সেই কাজটুকু সহজ ছিল কিন্তু এখন যখন আমি সেই উপন্যাসটি নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি, আমি বুঝতে পারছি এই কাজটুকু সহজ নয়। ভালোলাগা সহজ-ভালো লাগার কারণ বোঝা এত সহজ নয়! অবশ্যই লেখকের লেখার ভঙ্গি, ভাষা এবং লেখার ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সূক্ষ্ম হিউমার একটি কারণ, যেটি আমাকে বারবার আমার অগ্রজের লেখার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। তবে আমার কাছে প্রধান আকর্ষণ ছিল নানা চরিত্র, যাদের অনেকে অতিশয় বাস্তব চরিত্র, কাজেই লেখককে তাদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য খুঁজে বের করতে হয়েছে। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় ছিল কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতি, যেটি ছিল অভিনব। এই উপন্যাসের চরিত্রগুলো 'বাইনারি' চরিত্র নয়-সেগুলো বাস্তব চরিত্র এবং লেখক পুরোপুরি
জন্ম: ৩ জুন, ১৯৫৯, বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনীতিবিদ ও সাহিত্যিক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও, তিনি অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা ও অপারেশানস্ও বিজনেস রিসার্চ ইত্যাদি বিষয়ের অধ্যাপক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ১৯৮১ স্নাতক ও ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন এবং ১৯৯৭ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে অধ্যয়ন করেছেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি কিছু সময়ের জন্য পাবলিক পলিসি অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচ) যোগ দেন। অতঃপর সরকারের কর্মকর্তা হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কাজ করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও আংকটাডের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিনি কূটনৈতিক পদে বেলজিয়াম, সুইজারল্যাণ্ড ও লুক্সেমবুর্গ এ দায়িত্ব পাল করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় কার্যরত রয়েছেন। সাহিত্য গবেষণা তাঁর প্রিয় ক্ষেত্র। তিনি জীবনানন্দ দাশের কবিতা ও অন্যান্য রচনা নিয়ে প্রায় তিন দশক যাবৎ গবেষণা করে চলেছেন। জীবনানন্দ দাশের কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তিনি জীবনানন্দ দাশের স্বহস্তে লিখিত পাণ্ডুলিপির ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের সঠিক পাঠ নিরূপণ করেছেন। বিশেষ করে রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের বর্জিত অংশ পুনরূদ্ধার করেছেন ও সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত শব্দাবলী বর্জন করে বিশুদ্ধ পাঠ তৈরী করেছেন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা প্রতিবেদন ‘চটি সাহিত্যের পূর্ব পশ্চিম’। বর্তমানে তিনি বাংলা সাহিত্যের অভিধানে অসংকলিত শব্দ নিয়ে গবেষণা করছেন।