“কানাডার পথ ও রথের বৃত্তান্ত”। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা। এতই বৃহৎ যে এর ছয়টি ভিন্ন সময়কাল রয়েছে। সে দেশের মাটি, গতি প্রকৃতি কেমন তা বোঝার পাশাপাশি এদেশে জীবিকা নির্বাহের অজানা বিষয়কে সবার সামনে নিয়ে আসবো এমন কিছু ভেবেছি সবসময়। মূলত দুই খণ্ডের সমন্বয়ে বইটি লিখেছি। প্রবাস জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতাকে আরও কাছ থেকে দেখানোর ইচ্ছে বইটি রচনার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। প্রথম খণ্ডে কানাডার চাকরি বৃত্তান্তের আদ্যোপান্ত দেখিয়েছি যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য দিকনির্দেশনা প্রদানে সক্ষম হবে। (২০১৮-২০২৩) এ সময়কালের ভেতরেই পুরো প্রথম খণ্ডটি লিখিত হয়েছে। বাংলা ভাষায় এর আগে কেউ কানাডার চাকরি নিয়ে কোন বই প্রকাশ করেননি, তাই এটা বাংলা সাহিত্যের ভুবনে একটি অনন্য সংযোজন বলে মনে করি। প্রথম পর্ব শুধু পাঠককে পুস্তক পড়তেই উদ্বুদ্ধ করবে না, কানাডার জীবন, বিশেষ করে চাকরি জীবন, এর গতিপথের নানান বাঁক, সবশেষে কীভাবে স্হায়ী নাগরিকত্ব অর্জনের পথে ভুল পথ থেকে সরে আসা যায় তাও তুলে ধরবে। কেন চাকরি পাওয়া এত দুষ্কর বা সাক্ষাৎকারের টেবিলে বসে কী কী জানতে চাওয়া হয় তার অনেক প্রশ্নের খোলাখুলি আলোচনা করেছি এখানে। অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে এবং বহু উত্তর অজানা রয়ে গেছে। পাঠককে যা ভাবাবে, নিজের মত উত্তর অনুসন্ধানে প্ররোচিত করবে। আবার লেখকের সাথেও কল্পনার জগতে যোগাযোগের চেষ্টা করবেন পাঠক। দ্বিতীয় খণ্ডে দুই দেশের গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছি। সবাই গাড়ি চালাতে জানে। কিন্তু যিনি পারেন না বা অকৃতকার্য হন, তার পেছনে কারণগুলো অনুধাবন করতে গিয়ে পরের খণ্ডের অবতারণা করেছি। কানাডায় গাড়ি চালানো ছাড়া জীবন অতিবাহিত করা প্রায় দুঃসাধ্য! অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে ট্যাক্সিও যাবে না। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া আর কোন উপায় নেই! সমস্যা হচ্ছে কেন গাড়ি চালানো কঠিন হতে পারে বা একজন নতুন চালক হিসেবে কী কী অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া যায় তা নিয়ে কেউই কখনো আলোকপাত করেছেন বলে বোধগম্য নয়। তাই এই প্রয়াস। এই পর্বে বাংলাদেশের গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতাও রয়েছে । দেশের সাথে কানাডার গাড়ি চালানোর অসম সাদৃশ্য টানতে যাইনি। কতটা পার্থক্য রয়েছে এই দুই দেশের মাঝে তা পাঠকগণ নিজেই বুঝতে চেষ্টা করবেন পাঠের মাধ্যমে। দুই দেশকে, দূরের দুই মহাদেশের গাড়ি চালানো এবং আরও নানান দৃশ্যপটকে এক জায়গায় এনেছি। রচনাকাল (২০১৪ এবং ২০২০). 'কানাডার চাকরি বৃত্তান্ত' আর 'গাড়ি চালনার যত কেচ্ছা' নামে পুরো দু'টি লেখনীই পর্ব আকারে দৈনিক প্রথম আলোর দূর পরবাসে প্রকাশিত হয়েছে। এ বইয়ের আরও দুইটি ভিন্ন সংযোজন হচ্ছে - পাঠক-লেখক জিজ্ঞাসা এবং ছবি। পাঠকের সাথে লেখকের সেতুবন্ধন রচনা করার মানসে এ অংশ যুক্ত করেছি যাতে যে প্রশ্নগুলো তারা লেখককে করতে পারেন না, সেগুলো লিখে রাখতে পারেন বা লেখককে জানাতে পারেন নিজের জিজ্ঞাস্য বিষয়গুলো। কানাডার যাপিত জীবনের বাস্তব ছবি তুলে ধরা হয়েছে যাতে পাঠকগণ প্রবাসী জীবন কেমন তার হুবহু বাস্তব অভিজ্ঞতা নিজেদের চোখেও কল্পনা করতে পারেন।