গণপতি আদিত্য রচিত ‘নূর হোসেনের অনাদি যৌবন’ দীর্ঘ কবিতা। কবিতাটিতে আবেগের গতিপথে যথাশব্দের নিখুঁত সন্নিবেশন পাঠকের মনে ছন্দ ও সুরের গমন তুলে অপূর্ব এক দ্যোতনার সৃষ্টি করে। শব্দ কী করে আবেগ ধারণ করে, আবার আবেগ কী করে শব্দে ধারিত হয়ে কবিমনে আনন্দ-বেদনার মিথষ্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কাব্য নির্মিত হয়, তার এক দুর্দান্ত নিরীক্ষা রয়েছে গণপতি আদিত্য রচিত এই কবিতায়। শব্দে ধারিত আবেগ বনাম আবেগদ্বারা চালিত শব্দের মেলবন্ধনে নির্মিত কাব্যটি পাঠকের মননে বিপরীতের ঐক্য তথা দ্বান্দ্বিক সহাবস্থান তৈরী করে সমাজ পরিবর্তনের প্রেরণা যোগায়। কবিতাটিতে চয়নীয় শব্দসমষ্টি পরস্পরে বিজড়িত হয়ে কাব্যময় আবহ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যে শব্দতরঙ্গ সৃষ্টি করেছে, তা একটি নির্দিষ্ট সময়ের রাজনৈতিক বাস্তবতা থেকে উদ্ভূত সামাজিক শ্রেণী সংগ্রামের বিমূর্ত প্রপঞ্চ যা পাঠকের চৈতন্যে মূর্ত হয়েছে। একটি কবিতার উচ্চরণ যেন সমকালের আর্থ-সামাজিক তথা রাজনৈতিক বাস্তবতা থেকে উত্থিত শ্রেণীসংগ্রামের অনুকরণ। সময়ের সন্তানেরা কিভাবে ইতিহাসের দূষণ দূরীকরণে অগ্রসর হন, জীবন নিংড়ে সেই কথা গণপতি আদিত্য লিখেছেন— ‘রক্তে আমার ফুল ফোটে সূর্যের মতো বয়সের বিটপে শান্ত শীতল গোপন শিরায় ধমনীতে, জঞ্জাল ইতিহাস সেখানে ফুটে ফুটে বিশুদ্ধ হয় তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের কাছে বিশুদ্ধ জলের মতো;’