আমার বিশ্বাস ছিল আরমানকে থামিয়ে দেবে নূরজাহান, কিন্তু নূরজাহান আরমানের হাতে থাকা সেই পানির বোতল দেখে এতটা ভীত হয়ে গেছে যে, সে দেয়ালের গায়ে একদম লেপটে গেছে। নূরজাহানের ভয় আর আতঙ্ক দেখে আমি বুঝলাম, আরমানের সেই পানির বোতলে নিশ্চয়ই কোনো শক্তিশালী মন্ত্র প্রয়োগ করা আছে। তা নাহলে কেন নূরজাহান আমাকে এই পরিস্থিতিতে একা ছেড়ে দেবে? আরমানের চোখে-মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি স্পষ্ট। বাবা আরমানের উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন, ‘দেরি করো না আরমান। জলদি পানিটা ওকে খাইয়ে দাও। ওঝার কেরামতি কেমন সেটা দেখতে হবে তো।’ হুঙ্কার করে উঠলাম আমি, ‘খবরদার আরমান। ওই বিষাক্ত তরল আমার কাছে আনবি না। আমার ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করবি না।’ আরমান তাচ্ছিল্য করে বলল, ‘হুহ, স্বাধীনতা! ঘাহা; স্বাধীনতা তো হরণ করছে সেই মেয়েটা। ধীরে ধীরে তুই যার দাসে পরিণত হয়ে যাচ্ছিস।’ নূরজাহানের দিকে তাকালাম আমি। অসহায়ের মতো কাঁদছে সে। আরমান ধীরে ধীরে বোতলের ছিপি উন্মুক্ত করে ফেলল। এরপর আমার সামনে ধরে বলল, ‘লক্ষ্মী ভাই আমার। তোকে জবরদস্তি করার ইচ্ছে নেই। পুরোটা খেয়ে নিবি ঠিক আছে?’ নূরজাহানের দিকে আবারও তাকিয়ে দেখলাম, সে কাঁদতে কাঁদতে ইশারায় বুঝাচ্ছে; এই তরল পান করা যাবে না। আরমানের দিকে তাকিয়ে রাগে ফুঁসে উঠলাম আমি, ‘তুই কি সত্যিই আমার বন্ধু? তুই আমার ভালোবাসার পথে বাধার সৃষ্টি করতে চাইছিস? নূরজাহানের কথাই সত্যি হলো তবে। এই জগৎ আমার জন্য উপযুক্ত নয়। এই জগৎ দূষিত হয়ে গেছে।’