মিশর শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে গিজার পিরামিড ও স্ফিংক্স, নীল নদ, এমনকি আরো কিছু শব্দ কানের কাছে রিনরিন করে বাজে, যেমন মমি, ফারাও, প্যাপিরাস আর হায়ারোগাইফিক লিপি। প্রাচীন মিশরের গায়ের সঙ্গে পিঁয়াজ খোসার মতো পরতে পরতে জড়িয়ে আছে ফারাও রাজা এবং রানিদের শৌর্য-বীর্যের কাহিনি, আদিকালের সভ্যতার নির্মম ইতিহাস, প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য এবং শিল্প-সংস্কৃতির ছাপ। আমার স্ত্রী এবং আমি ২০২০ সালের মধ্য জানুয়ারিতে মিশর গিয়েছিলাম। আড়াই সপ্তাহের ভ্রমণে আমরা পর্যটকদের কাছে প্রিয় ও আকর্ষণীয় প্রায় সব জায়গাতে গিয়েছি এবং দেখেছি প্রাচীন স্থাপনা। আমাদের ভ্রমণ শুরু হয়েছিল মিশরের বর্তমান রাজধানী কায়রো থেকে। তারপর পর্যায়ক্রমে ভ্রমণ করেছি ভূমধ্যসাগরের রত্নময়ী শহর আলেকজান্দ্রিয়া, পুরাতাত্ত্বিক নগর লুক্সর, লুক্সর থেকে আসওয়ান পর্যন্ত নাইল রিভার ক্রুজ এবং আসওয়ান। মিশর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে অনেকেই ভ্রমণগল্প বা কাহিনি লিখেছেন এবং বাজারে একাধিক গ্রন্থ রয়েছে। এছাড়া অনেকেরই লেখা বিভিন্ন সাহিত্য সাময়িকী, ম্যাগাজিন এবং অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। এ কথা সত্যি যে, একই স্থানে ভ্রমণকাহিনি সবার একই হবে, তা সঠিক নয়। আবার এক একজনের গল্প বলারধরনও ভিন্ন। তাই ভ্রমণগল্প নির্ভর করে কাহিনি কে বলেছেন বা কে লিখেছেন, তার ওপর। বলা যায়, সাধারণ ভ্রমণগল্পের থেকে 'বাইরে দূরে মিশর ঘুরে'-র স্বাদ আলাদা। কেননা এই গ্রন্থে শুধু সাদামাটা ভাষায় নিছক ঘোরাঘুরি কিংবা দেখার বা পর্যবেক্ষণ করার মামুলি বর্ণনা দেওয়া হয়নি, বরং অনেক জায়গায় অচেনাকে দেখার আনন্দ ও অনুভূতিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনুসন্ধিৎসু পাঠকের সুবিধার্থে প্রায় প্রতিটি দর্শনীয় স্থানের ইতিহাস এবং দৃষ্টি নন্দন স্থাপনার উপযোগী ও আনুষঙ্গিক বিভিন্ন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
ফজল হাসান সাহিত্যিক ছদ্মনাম। পােষাকী পরিচয় ড. আফজল হােসেন। মৌলিক ছােটগল্প, অনুবাদসাহিত্য এবং ছড়া রচনায় তিনি ইতােমধ্যে পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন। ঢাকার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার নিয়মিত সাহিত্য সাময়িকী ও বিশেষ সংখ্যায় এবং সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অনলাইন ম্যাগাজিনে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে তার মৌলিক এবং অনুবাদ গল্প । এ পর্যন্ত তিনটি মৌলিক ছােটগল্প এবং পাচটি অনুবাদ গল্পের সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলামাটি অনলাইন ম্যাগাজিনে অস্ট্রেলিয়ার চিঠি শিরােনামে নিয়মিত কলাম লিখছেন। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসাবে ২০০৬ সালে পেয়েছেন প্রিয় অস্ট্রেলিয়া থেকে ‘প্রিয় লেখক পুরস্কার এবং ২০১০ সালে। ‘বাসভূমি’র পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে পেয়েছেন বাসভূমি পুরস্কার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণীতে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করার পর ফরেস্ট্রিতে। ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সপরিবারে বসবাস করছেন ক্যানবেরায়।