৭১-এ মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি ছিল গ্রামবাংলা। আর ছোটো-বড়ো প্রায় সব শহরই পাক হানাদার ও রাজাকারদের দখলে ছিল। শহরগুলোতে গেরিলা কায়দায় আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামের মুক্তাঞ্চলে ফিরে আসতেন। গাঁয়ের মানুষদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সমর্থনে সেই যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম। এই উপন্যাসে গ্রামাঞ্চলের মানুষদের কীর্তি বিবৃত হয়েছে। ১৯৭০-এ আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়, ক্ষমতা হস্তান্তরে পাকিস্তানিদের টালবাহানা, বাঙালির অসহযোগ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চে ঢাকায় গণহত্যা, নয় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ, ১৬ ডিসেম্বরে বিজয় অর্জন, ১০ জানুয়ারি/৭২ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলায় ফিরে আসা ইত্যাদি চিত্রিত হয়েছে এই উপন্যাসে। দাদি আম্মা, এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। গাঁয়ের অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং ধনাঢ্য জোতদার তিনি। তাঁর দাপটে এলাকায় বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়। খাঁটি দেশপ্রেমিক এই নারী তাঁর প্রভাব, ক্ষমতা এবং ধন-সম্পদ স্বাধীনতার জন্য উজাড় করে দেন। লক্ষ্মী বোষ্টমী, গাঁয়ের একজন বাসিন্দা। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তার সমর্থন স্বতঃস্ফূর্ত। অলৌকিক ক্ষমতাধর এই সুন্দরী নারী গাঁয়ের যুবক মুক্তিযোদ্ধা হাসানের প্রতি অনুরক্ত। তবে ওদের অনুরাগ লৌকিক নয়, তা আধ্যাত্মপ্রেম। চলমান মুক্তিদ্ধের সাথে তাল মিলিয়ে বোষ্টমী ও হাসানের প্রেমলীলাও পরিণতির দিকে এগিয়েছে।