‘ভূত’ – আটপৌরে গল্পের আসর থেকে শুরু করে বাঙালির শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, সর্বত্রই রয়েছে এঁদের অবাধ (অশরীরী!) বিচরণ। ভূত নিয়ে নানা কুসংস্কারও প্রচলিত আছে গ্রামীণ সমাজে, যেসবের অনেকটাই এখন বিলুপ্তির পথে। জীববৈচিত্র্যপূর্ণ বাঙলা দেশে, ভূতের মধ্যেও রয়েছে নানান বৈচিত্র্য। পেত্নী, শাঁখচুন্নি, স্কন্ধকাটা, মামদো, পিশাচ, নিশি, ডাইনি, গেছো ভূত, মেছো ভূত... এমন কতশত প্রকারভেদ আছে বাঙালি ভূতেদের। যেমন বিচিত্র তাঁদের স্বভাব, তেমনি কিম্ভূত তাঁদের অবয়ব। আবার এইসব ভূত নিয়ে মানুষের মধ্যেও রয়েছে কতশত লোকাচার, সংস্কার, কুসংস্কার। যুগ যুগ ধরে বাঙালির লোকসংস্কৃতি, গল্প, সাহিত্য, উপন্যাসে উঠে এসেছে এইসব ভূতেদের কথা। কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব ভূতেদের নিয়ে পূর্নাঙ্গ গবেষণা হয়েছে খুব কম। এঁদেরকে নিয়ে স্বতন্ত্র কনো গ্রন্থ, বা আলাদা কোন অভিধানও লেখা হয়নি বাংলা সাহিত্যের সুদীর্ঘ ইতিহাসে। ‘ভূত অভিধান’ এমনই এক প্রয়াস - যেখানে বাংলা সংস্কৃতির ভূতেদের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ চিত্রিত করা হয়েছে। একইসাথে প্রধান প্রধান ভূতগুলোকে নিয়ে লেখা আলাদা আলাদা গল্পও যুক্ত করা হয়েছে। গ্রন্থাকারে লেখা বাংলাদেশের প্রথম ‘ভূত অভিধান’ হিসেবে এই বই ভূতের গল্পপ্রিয় পাঠক থেকে শুরু করে লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ – সকলেরই উপকারে আসবে, এমনটাই প্রত্যাশিত।