আর একবার কলিংবেল বাজার আগেই দরজা খোলে টোটো। দরজা খোলার পর যাকে দেখল, ভয়ে ওর পুরো শরীর কাঁপতে থাকে। দরজায় দাঁড়িয়ে আছে বিরাট এক দ্য গ্রেট বাঘ মানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। অনেক দূরের গভীর সুন্দরবনের বাঘ ঢাকা শহরের এই বাসার ভেতরে ঢুকল কীভাবে? ওকে দেখে বাঘটা একটু হাসল রাজকীয় লাল টকটকে জিব বের করে। বসল লেজটাকে ভাঁজ করে দরজার সামনে। টোটো কী করবে ভেবে পায় না। দরজা বন্ধ করতে চায় কিন্তু বাঘটা টোটোকে হালকা ধাক্কা দিয়ে রুমের ভেতরে ঢুকে যায়। বাঘের ধাক্কায় টোটো মেঝেতে হোঁচট খেতে খেতে সোফায় বসে দুদিকে দু পা ছড়িয়ে। এই ফাঁকে দরজা বন্ধ করে বাঘটাও বসে টোটোর মুখোমুখি সোফায়। টোটো বাঘের কাণ্ড দেখে হতবাক। বাঘটা এলো কোত্থেকে? যেভাবে দরজা দিলো, সোফায় বসলো মনে হয় বাঘটা লেখাপড়া জানে। কোন স্কুলে পড়ে? বাতাসের মতো কাঁপছে টোটো। কী করবে এখন ও? মা আর পাপা অফিসে। ছুটি পেয়ে ইচ্ছেমতো ঘুমুবে তা আর হলো না, কোত্থেকে এক বাঘ এসে জুটেছে ভর সকালে। এই বাঘটা কি এখন ওকে খাবে? শুনেছে, বাঘে একবার যাকে ধরেছে, তার শেষ দেখে ছেড়েছে। আজকে ওর জীবনের শেষ দিন। তাতা, লালা, নীনা, কাকা, শাশা কারো সঙ্গে দেখা হবে না আর। কেউ জানবে না, ওকে বাসায় এসে একটা বাঘে- ওর চোখ ফেটে পানি আসে। আর কয়েকদিন পর গ্রামের বাড়ি, দাদার কাছে যাওয়ার প্ল্যান ছিল, সব শেষ। হেঁচকি দিয়ে কাঁদতে শুরু করে টোটো কেন দরজা খুললাম আমি?
জন্ম ১৯৬৮ সালে পহেলা মে [সার্টিফিকেট অনুসারে] বৃহত্তর বরিশালের পিরোজপুর জেলার ভানডারিয়া উপজেলার বোথলা গ্রামে, প্রমত্ত কচানদীর পারে। শৈশব থেকে লেখালেখির শুরু।