যে তুমি কখনো আসো নি কবিতা সার্বজনীন। আর তাই নিজ দেশের, নিজ ভাষায় কবিতা যেমন আমাদের মুগ্ধ করে, সম্পূর্ণ ভিন্ন দেশের, ভিন্ন ভাষার কবিতা পড়েও আমরা প্রায় সমভাবেই আপ্লুত হই। লেখনী ও বিষয়বস্তুর গুণে কবিতা জাতি, ভাষা ও সমাজের ঊর্ধ্বে উঠে হয়ে ওঠে সর্বজনগ্রাহ্য, কালোত্তীর্ণ। তাই এক দেশের বা এক ভাষার কবিতা অবলীলায় প্রাণস্পর্শ করে সম্পূর্ণ ভিন্ন দেশের, ভিন্ন ভাষার পাঠকের। এই পৌঁছে দেবার কাজে অনুবাদ সাহিত্যের গুরুত্ব অপরিসীম। আরেকভাবে ভাবলে কবিতা একদিকে যেমন সার্বজনীন, অন্যদিকে একজন পাঠকের কাছে কবিতার আবেদন আবার অনেকটাই স্বতন্ত্র। একই কবিতারে দ্যোতনা ভাষা, সমাজ, সময়, লিঙ্গ, ব্যক্তির মানসিক গঠন ইত্যাদি ভেদে হয়ে উঠতে পারে এতেবারেই ভিন্ন। অনুবাদে তাই মূল কবির ভাবনাকে হুবহু চিত্রিত করতে চাইলেও অনুবাকের ব্যক্তিগত রুচি, ভাবনা আর সমাজের ছাপ কিছু না কিছু চলেই আসে। ‘সে তুমি কখনো আসো নি’ বইটিতে কবি রুচি রোকসানা ২৯ জন কবির ৬০ খানা কবিতা অনুবাদ/ভাবানুবাদ করেছেন। রুচির লেখার ধরণ কিছুটা ভিন্ন ছত্র ধরে ধরে অনুবাদ নয়, বরঞ্চ একটি কবিতা পড়ে কবি হৃদয়ে যে উপলদ্ধি, আনন্দ বা মনোবেদনা, আর উদ্বেলতার সৃষ্টি হয়- রুচি তাই প্রকাশ করেন একেবারে নিজের মতো করে, একে অনুবাদের চেয়ে ভাবানুবাদ বলাই শ্রেয় কোনো কেনো কবিদায় মূল ভাবের অনেকটাই পরিবর্তন, পরিমার্জন বা ভাবের আত্তীকরণ হয়ত হয়েছে, তবে সব মিলিয়ে মূল কবিতার উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়নি কখনো। পাঠকের সুবিধার্থে মূল কবিতা কিম্বা মূল কবিতার ইংরেজি অনুবাদ অনুবাদের সাথেই প্রকাশ করা হয়েছে। কবিতাগুলো বিশ্বসাহিত্যে আগ্রহ আছে, এমন পাঠকেদের ভালো লাগবে বলেই আশাবাদ রইলো।