মিজোরামের গোত্রসমাজ থেকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং প্রতিরোধ যুদ্ধের পর ব্রিটিশের ছত্রছায়ায় একটি খ্রিষ্টান সমাজে রূপান্তর আমার কাছে অভিনব মনে হয়েছে। ব্রিটিশ ও খ্রিষ্টান গির্জাকে কেন্দ্র করে একটি ইউরোপীয় সংস্কৃতির প্রভাবে মিজোরামে নতুন সমাজ গড়ে উঠে। ব্রিটিশরা ভারত ত্যাগ করার সময় মিজোরাম (লুসাই পার্বত্য জেলা) ভারতের আসাম প্রাদেশিক সরকারের হাতে হস্তান্তরিত হয়। ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়ায় মিজোদের স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে ধাবিত করে। এই সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ^পরিস্থিতি, আঞ্চলিক রাজনীতির কারণে পরস্পরের বিপরীত অবস্থানে চলে যায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সফল হওয়ায় মিজোরামের স্বাধীনতা যুদ্ধ ভৌগোলিক সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। মিজোরা সশস্ত্র লড়াই স্থগিত করে সংসদীয় রাজনীতিতে ফিরে আসে। মিজোরাম ভারতের অন্যতম রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে। মিজোর স্বাধীনতাকামীরাই (মিজোরাম ন্যাশানাল ফ্রন্ট) ভোটের মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিন মিজোরামে রাজ্যের ক্ষমতায় অবস্থান করছিল। ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ মিজোরামের আরেকটি আঞ্চলিক দল (মিজোরাম পিপলস্ মুভমেন্ট) ভোটে জিতে যায়। মিজোদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ব্যর্থতার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সফলতা, অন্যতম ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে- তাই বইটি নিছক আর ভ্রমণ কাহিনি থাকেনি। হয়ে উঠেছে মিজোদের ঘটনা- প্রবাহ ও বিবর্তনের সংক্ষিপ্ত চিত্র।