দেশ, সমাজ ও জাতি নিয়ে সমাজের বিভিন্ন অংশের ব্যক্তিবর্গ চিন্তা ভাবনার প্রকাশ ঘটান নানাভাবে। প্রত্যেকের লক্ষ্য হয়তো থাকে মানুষের। হিত সাধন, কিন্তু কাজের ধরনটা হয় আলাদা আলাদা। প্রত্যেকে কাজ করেন, দেশসেবা করেন। প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করা গেলে দেশ ও সমাজ তার দ্বারা বেশি উপকৃত হতে পারে। এমনি একজন এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী আর তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজের বর্ণনা বা বিবরণ উঠে এসেছে এই বইয়ে। ফেনী এক সময় ছিল সন্ত্রাসকবলিত এক জনপদ। একজন অকুতোভয় সরকারী কর্মকর্তা/প্রশাসক কী করে সেই অবস্থার বদল ঘটান আর সমাজে বইয়ে দেন সুবাতাস তারই বিস্তারিত বিবরণ/রেকর্ড এই বই। লেখার গুণে একজন জেলা প্রশাসকের প্রাত্যহিক কাজের বিবরণ হয়ে উঠেছে সেনসেশনাল এক কাহিনি। যা পাঠকের ভাল লাগবে। আগামী দিনগুলোতে যারা প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করবেন তাদের জন্য একটি আকরগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে এ বই। গ্রন্থকারের আত্মজৈবনিক রচনা হলেও অনুসন্ধিৎস্য গবেষক-ইতিহাসবিদদের জন্যে 'ফেনীতে ৩২১ দিন: জেলা প্রশাসক হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা' বইটি হয়ে উঠেছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের আর্থ-সামাজিক দলিল। লেখক পরিচিতি : এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ সচিব হিসেবে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে দেশের সেবা করেছেন। তাঁর জন্ম ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ফেনুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতা মরহুম আব্দুল জাব্বার ও মাতা মরহুমা শাহার বানু। ১৯৭৯ সালে সহকারি কমিশনার পদে সরকারি চাকরিতে যোগদান। এরপর সরকারের বিভিন্ন দফতরে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে সাফল্যের সাক্ষর রেখেছেন। চাকরিকালে তিনি ইউ এস টি সি থেকে MBA ডিগ্রী লাভ করেন। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। এর আগে বাংলাদেশে পাটকল কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, ফেনী ও কুড়িগ্রামের ডিসি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব ছিলেন। সবশেষে জনতা ব্যাংক লিমিটেড-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালে অবসর গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে আই আই ইউ সি-তে খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন। ২০১৯ সালে 'জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ' নামের রাজনৈতিক প্লাটফরম-এর সাথে সম্পৃক্ত হন। ২০২০ সালে নব গঠিত রাজনৈতিক দিল 'এবি পার্টি'র কেন্দ্রীয় আহবায়ক নির্বাচিত হয়ে এখনো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব, মঙ্গাকবলিত কুড়িগ্রাম জেলাকে খাদ্যে ঘাটতি থেকে খাদ্যে উদ্বৃত্ত করেন। সততা ও আদর্শে অবিচল থেকে সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে তিনি বেশি আলোচিত হন। ফেনীর ডিসি হিসেবে তিনি অসাধ্য সাধন করে আলোচিত হন। এই বইতে সেই কাহিনি বিধৃত। তিনি মায়ানমার, সিংগাপুর, চীন, ইরান, সিরিয়া, সুদান, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন। তিনি ৩ পুত্র ও ৪ কন্যার পিতা।