কবি, কথাসাহিত্যিক মিনতি দাস শিশুসাহিত্যেরও অনন্য সেবক। সহজাত উপলব্ধির মাধ্যমে সাধারণ জনজীবন ও প্রকৃতির বিভিন্ন দিকে বিচরণ করার চেষ্টা করছেন। অত্যন্ত পরিশীলিত ভাষায় চিত্রকল্পের সুষমাব্যঞ্জনে সমাজের চিরাচরিত নিয়মে বন্দি কতিপয় আলোকচ্ছটা পাঠক-হৃদয়ে সুরের ঝলকানিস্বরূপ কিছু বাস্তবধর্মী অনুভতি উপহার দিতে চেয়েছেন। ইতোপূর্বে লেখকের ৮টি গ্রন্থের পরে দাঁড়িকমা প্রকাশনীর এই ‘দলে বলে স্কুলে’ গ্রন্থটি সকল অনুশীলনের ছাপ পেরোতে চেষ্টা করেছে, তা বলা-ই বাহুল্য। পেশাগত জীবনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিশুদের মনোজগৎ তাঁর অনেকটাই আয়ত্তে। বর্তমান শিক্ষাক্রম অনুযায়ী সৃজনশীল লেখা ও কাজে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করতে এই গ্রন্থ পালন করতে পারে সহায়ক ভূমিকা। অভিভাবকদের করণীয় নিয়ে ‘বনভোজনের গান’, পাবলিক পরীক্ষায় পাস-ফেল নিয়ে ‘জয়ের জয়’, সমাজের কুসংস্কার যখন মেয়েদের জীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়ায় তা নিয়ে ‘প্লেয়ার অফ দি টুর্নামেন্ট’, দরিদ্রতার রোষানলে শিশুদের চাহিদা ও কষ্টকে কেন্দ্র করে ‘মসল্লা’, শিশুমনের আবেগের কথকতা নিয়ে ‘দুষ্টু মিষ্টি বয়ি, ভূত নিয়ে লিখেছেন ‘তালগাছের ভূত’ প্রভৃতি গল্প। এই বইটি পাঠ করলে শিশুরা যেমন তাদের মনের কথাগুলো পড়তে পারবে, তেমনি বড়রাও কোথায় কোথায় শিশুদের সমস্যা, চাহিদা, মনের সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে তা বুঝতে পারবেন বলে আমি মনে করি। এরকম একটি দরকারি গল্পের বই লেখার জন্য আমি সাহিত্যিক মিনতি দাসকে অভিনন্দন জানাই। আশা করি শিশুদের মনোগঠনে এই গ্রন্থ কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ড. তপন বাগচী কবি ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত ফোকলোরবিদ পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ফোকলোর, জাদুঘর ও মহাফেজখানা বিভাগ বাংলা একাডেমি, ঢাকা