মীর মশাররাফ হোসেন - আত্মজীবনী আরবি ভাষা ও কুরান শিক্ষা সম্পর্কে নিজ সম্প্রদায়ের দীনতা ও দেউলিয়াত্ব সম্পর্কে ব্যথিতচিত্তে লিখেছেন— ‘পুণ্য জন্য আরবি শিক্ষা। কোরাণ শরীফ পাঠ। সে পাঠ বড়ই আশ্চর্য। অক্ষর পরিচয় হইলেই কোরাণ শরীফ পড়ার নিয়ম। সে পড়া পড়িয়া যাওয়া মাত্র, আরবি কোরাণ শরীফের অর্থ কেহুই আমাদের দেশে জানিতেন না। এখন পর্যন্ত মোল্লার দল যাহারা কোরাণ শরীফ পড়িয়া পয়সা উপার্জন করে, তাহারা ত জানেই না। শুধু পড়িয়া যাওয়া তাদের শিক্ষা, বিদ্যা বঙ্গবাসী মুসলমানের পক্ষে বড়ই কঠিন।’ অকপট ও নির্ভয় থাকতে পাঠকদের উদ্দেশে লিখেছেন— ‘প্রিয় পাঠকগণ! — আমি কপটভাব শিক্ষা করি নাই। যে কথা খোদাতা’লার নিকট গোপন নাই, তাহা মানুষের নিকট গোপন করিব কেন? খোদাতা’লার অন্তর্যামী সর্বজ্ঞ শাস্তিদাতা রক্ষাকর্তা— মার্জনাকারী। মানুষ তাহা নহে—তবে মানুষের ভয় কিসে? জীবনের সত্য প্রকাশে অবিচল থেকে স্ব-সম্প্রদায়ের জনসাধারণকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে লিখেছেন— ‘সত্যাশ্রয়ে সত্যই আমার জীবনের মূল উদ্দেশ্য। সত্য প্রকাশেই আমার স্তির সংকল্পঅ যদি স্বজাতি মানবের উপকার সাধন জন্য সত্যপথে দণ্ডায়মান হইতে হয়। যদি মোসলেম সমাজের উপকারে হস্ত প্রসারণ করিতে হয়, — মনে মুখে সমাজের উপকারে জীবন উৎসর্গ করিতে ইচ্ছা হয়-তবে সত্যই আশ্রয়। সত্যই প্রকাশ। — সত্যই সহায়।’ কালর সুগভীর উপলদ্ধি ধারিত গ্রন্থ মীর মশাররাফ হোসেনের ‘আমার জীবনী’।