বাংলাদেশের সাময়িকীর জগতে বক্তব্য একটি উজ্জ্বল স্থান অধিকার করে আছে। বক্তব্য কোনোভাবেই শুধু ‘সাহিত্য’ পত্রিকা ছিল না। জীবনের গভীরতর তাৎপর্য অন্বেষণের সব প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাতে চেয়েছিলেন সম্পাদকরা, সমকালীন প্রায় সকল অগ্রগণ্য লেখকের প্রধানতম কাজগুলো প্রকাশ করেছিল বলেই মননশীল পাঠকসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল পত্রিকাটি। তবে মানসম্মত রচনা ও আবশ্যক আনুষঙ্গিকের অভাবে মাত্র বারোটি সংখ্যা প্রকাশের পর তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেই যেমন যাত্রা শুরু হয়েছিল পত্রিকাটির, তেমনি কারণ ব্যাখ্যা করেই এর সমাপ্তি ঘোষণা করেছিলেন সম্পাদকরা। ১৯৭০ দশকের বাংলাদেশের চিন্তাবিদদের আলোড়িত করছিল কোন কোন বাস্তবতা ও প্রবণতা, তার পূর্ণ প্রকাশ মিলবে বক্তব্য পত্রিকার সূচিপত্রে। এই অর্থে বক্তব্য-তে প্রকাশিত লেখাগুলো সময়ের ঐতিহাসিক দলিল। পাঁচমিশালি রচনা নিয়ে বক্তব্যকে সম্পাদকেরা ‘বৈশিষ্ট্যহীন’ অবস্থায় বাঁচিয়ে রাখবার চেষ্টা করেননি।বরং, রাজনীতি-অর্থনীতি-সমাজবিজ্ঞান এবং সাহিত্যের গতিপ্রকৃতির গভীর পরিচয় পাওয়া যাবে বক্তব্য-এর সামগ্রিক অবয়বে। বারোটি সংখ্যা থেকে সংকলিত লেখা নিয়ে নির্বাচিত বক্তব্য প্রকাশিত হলো, এখানেও আমাদের চেষ্টা ছিল বক্তব্য সাময়িকীটির সামগ্রিকতাকে ধারণ করবার। গবেষক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অনুসন্ধিৎসু পাঠকের জন্য নির্বাচিত বক্তব্য একটি আকর্ষণীয় আকরগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হবে।