১৯৭১-এর ১৫ই আগস্ট। মাঝরাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠল চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরের পাশাপাশি চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ নৌবন্দর। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হতাশায় নিমজ্জিত করে দেশি-বিদেশি ২৬টি জলযান গভীর পানিতে ডুবে গেল। অভিনব কৌশলের এই গেরিলা অপারেশনের মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ত্বরান্বিত হলো। বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াল নতুন একটি দেশ- বাংলাদেশ। কারা ছিলেন এই গেরিলা অপারেশনের নেপথ্যে? কীভাবে সংগঠিত হলেন তাঁরা দেশমাতৃকার সেবায়? স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এমন অজস্র প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। একে একে প্রকাশিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতিকথা, সাক্ষাৎকার ও গবেষণাগ্রন্থ। তারই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের বায়ান্ন বছর পরে প্রকাশিত হলো মুক্তিযুদ্ধের নৌ-কমান্ডো বাহিনীর অন্যতম সদস্য শাহজাহান কবির বীরপ্রতীকের অনন্য স্মৃতিকথা আমার একাত্তর। এই বাহিনীর সদস্যরা দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করার বন্ডে স্বাক্ষর করে নৌ-কমান্ডো প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এই স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থে লেখক মুক্তিযুদ্ধ ঘিরে নিজের জীবনকথা ও নিজের কয়েকটি দুঃসাহসী অপারেশনের কাহিনি তুলে ধরেছেন। নৌ-যুদ্ধের বাইরেও প্রাসঙ্গিকভাবে বর্ণিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও বিস্তৃত ঘটনাবলি। সামগ্রিক অর্থে আমার একাত্তর গ্রন্থটি হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসমালায় এক মূল্যবান সংযোজন।