পরদিন তারিকুর কাগজটি নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করল। আজ সে স্কুলে একটু তাড়াতাড়ি এসেছে। তারিকুরদের স্কুলে প্রিন্সিপালের অফিস গ্রাউন্ড ফ্লোরে। যাই হোক, তারিকুর প্রিন্সিপালের অফিসে ঢুকল। তারিকুর : আসসালামু আলাইকুম স্যার। প্রিন্সিপাল : ওয়ালাইকুম আসসালাম, বলো বাবা। তারিকুর : আমার আপনার কাছে একটি অনুরোধ আছে। প্রিন্সিপাল : কী? তারিকুর : কাগজের লেখাটা একটু পড়ুন স্যার! প্রিন্সিপাল স্যার কাগজটি পড়লেন। সেখানে লেখাÑ‘সারাদেশের স্কুলগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে স্কুলভিত্তিক দাবা প্রতিযোগিতা। যে স্কুল প্রথম হবে, তারা ১০ লাখ টাকার পুরস্কার পাবে। যেসব স্কুল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চায়, তারা ছয় সদস্যের টিম নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে।’ প্রিন্সিপাল : আচ্ছা বাবা, তোমার বয়স কত, মানে তুমি কোন ক্লাসে পড়ো? তারিকুর : আমার বয়স ১৩ বছর আর আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি। প্রিন্সিপাল : দেখো বাবা, তুমি হয়তো বলবে এটা অফিসিয়াল নোটিশ। কিন্তু এটা তো বানানোও হতে পারে, তোমার কথা আমি কিভাবে বিশ্বাস করব? ছাত্ররা এভাবে মজা করে। আমি দুঃখিত, আমি এটা গ্রহণ করতে পারব না। এ কথা শুনে তারিকুরের মুখ শুকিয়ে গেল। তার মনটা ভেঙে গেল। তারিকুর : ঠিক আছে স্যার। আপনাকে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত। তারিকুর কাগজটি নিয়ে তার ক্লাসরুমে চলে গেল। ততক্ষণে অ্যাসেম্বলি শুরু হয়ে গিয়েছিল। তারিকুর : কিন্তু মিস এই কাগজটা যে ইলিয়াস স্যারকে দিতে হবে। মিস : তোমাকে আর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা বলতে হবে না। তোমার কথাবার্তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে তুমি মিথ্যা বলছ। তোমার প্ল্যান এখন অন্য ক্লাসে গিয়ে মারামারি করে টিফিন কেড়ে নেয়ার, তাই না? তোমাদের মতো ছাত্রদের সব ধান্দা জানি আমি। আর একবার বলব, চলে যাও না হলে কিন্তু ভালো হবে না! তারিকুর : আরে, আমি এখানে স্কুলের জন্য নিজেকে বিসর্জন দিতে চাচ্ছি আর আপনি আমার ওপর অকারণে রেগে যাচ্ছেন? এ কথা শুনে মিস তার কাঠের স্কেলটি বের করল। মিস : যাবে নাকি... তারিকুর : আচ্ছা ঠিক আছে, ঠিক আছে। সরি, আমি যাচ্ছি যাচ্ছি! তারিকুর ভয় পেয়ে ক্লাসে ফিরে যাচ্ছিল, তখনই ইলিয়াস স্যার এলো। ইলিয়াস : কী খবর তারিকুর? কেমন আছো তুমি? তারিকুর : স্যার! আপনি একদম ঠিক সময়ে হিরোর মতো চলে এসেছেন! স্যার, এই কাগজটা ধরেন স্যার! ইলিয়াস : কেন বাবা? এই কাগজে কী আছে? তারিকুর : অত কিছু বোঝানোর ধৈর্য আর সময় আমার নেই! আপনি শুধু এটা প্রিন্সিপাল স্যারকে দিয়েন। ঠিক আছে? আমি আসি স্যার! এই বলে তারিকুর ক্লাসে ফিরে গেল।