কবিতা ও প্রেমের মধ্যকার সম্পর্কটি কেবল ঐতিহাসিক নয়, তা সাংস্কৃতিক এবং মনস্তাত্তি¡কও বটে। গবেষকরা বলেন, কবিতা ও প্রেম মানব মস্তিষ্কের একই অঞ্চলকে উদ্দীপ্ত করে। মস্তিষ্কের এ অঞ্চলটিতে আবেগ ও আত্মসমীক্ষাও সক্রিয়। প্রেমকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে সেই ১৬৮১ সালেই এন্ড্রু মার্ভেল বলেছিলেন, ভালোবাসা পুরোপুরি অদৃষ্ট দ্বারা নির্ধারিত, তার উপর মানুষের সামান্যই নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। মার্ভেল তার প্রেমাষ্পদ থেকে যতই দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন, ততই তার কাছে প্রেমকে পবিত্র ও দুর্লভ বলে মনে হয়েছে, যদিও প্রেমিকার সাথে মিলিত হবার কোনো সম্ভাবনা তার ছিল না। সচরাচর এমনও বলা হয় যে প্রেম ও কবিতা মর্ত্যে নয়, স্বর্গে রচিত হয়। কবি সুসান লেয়ারির মতে, সকল কবিতাই প্রেমের আবেগের কথা বলে। এত কথা বলার কারণ আফলাতুন নাহারের কবিতার কেন্দ্রীয় বিষয় প্রেম। তার কবিতা প্রেমের আবেগে আক্রান্ত, প্রেমাস্পদের উদ্দেশ্যে রচিত, প্রেমিকের দর্শনে কবি যেমন উতলা উৎফুল্ল হন, তেমনি প্রেমিকের বিরহে হয়ে পড়েন বিমর্ষ ও কাতর। বিশ্বাসঘাতক ও প্রবঞ্চনাপূর্ণ প্রেমিকের প্রতি তার ক্রোধও কম নয়, রয়েছে হতাশা ও আশাভঙ্গের বেদনা। তার কবিতায় নস্টালজিয়ার বসবাস। বেশ কিছু কবিতায় তিনি শৈশবে ফিরে যেতে চেয়েছেন। তবে একজন কবির জন্য প্রেম উদ্দীপনা হলেও তার প্রথম প্রেম শব্দ ও বাক্যের সাথে। প্রেমের আবেগকে শব্দে ধারণ ও রূপায়িত করায় কবির ঐকান্তিকতা প্রশ্নবিহীন।