উক্তি, দার্শনিক নিরীক্ষায় প্রবন্ধসাহিত্য অনেক সময় ভারি হয়ে ওঠে বলেই সৃজনশীল লেখক তাঁর চিন্তাকে নির্ভার দিগন্তে উন্মোচিত করে মুক্তগদ্যে। বজলুল করিম বাহার সেই ধারার লেখক। চতুর্মুখী সাহিত্য রচনায় তিনি সিদ্ধহস্ত। গল্প-কবিতা-প্রবন্ধসহ নানামুখী কাজ করে চলেছেন জীবনব্যাপী। গদ্য-পদ্যের দ্বন্দ্ব, বৈভব ও বিন্যাস-সচেতন এই লেখক তাঁর নান্দনিক রুচির পরিস্রবণে নির্মাণ করেছেন শিল্প-সাহিত্যের মূল্যায়নবিষয়ক অসংখ্য রচনা। সেগুলো থেকে নির্বাচন করে গ্রন্থভুক্ত করা হলো ‘শিল্পের বর্ণময় প্রতিচ্ছায়া’। এই গ্রন্থে সাহিত্যে স্মৃতির আর্ত স্থাপত্য শীর্ষক গদ্যে তিনি বিশ^সাহিত্যে নস্টালজিয়া নিয়ে যে নিরীক্ষা হয়েছে, তার নান্দনিক পরিবীক্ষণ ঘটিয়েছেন নৈপুণ্য সহকারে। সময়গ্রন্থির চেতনাসন্ধির কবিতা শীর্ষক গদ্যে তিনি কবিতাবিষয়ক তাঁর দার্শনিক উপলব্ধিতে উপলব্ধ হয়ে দেখিয়েছেন, কবিতা হচ্ছে--পরস্পরের প্রতি গোপন নিরুপায় অভিমুখীতা সৃষ্টির বৈদ্যুতিন মাধ্যম। তলানীতে থাকা ব্রাত্য জীবনকথায় মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিক উপলব্ধিকে সাবঅলটার্ন সাহিত্যের নিরিখে মূল্যায়ন করেছেন। সর্বশেষ ঋত্বিক : জাঁ-লুক গোদার ও আন্দ্রেই তারকোভস্কি : কাব্যধর্মী চলচ্চিত্রের শিরোমণি শীর্ষক রচনা দুটোতে তিনি গোদার ও তারকোভস্কির চলচ্চিত্র দর্শনকে প্রস্ফুটিত করেছেন বাস্তবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির অভিজ্ঞায়।