শুনতে কি পাও শব্দের সফর? খুব কাছে, খুব কাছে...! ভালোবেসে খুন করেছো অনায়াসে শীত কুয়াশার ডিঙিচাঁদ মৃগয়া মাঠে যেদিন প্রথম এলে সেই আলোয় নীলকণ্ঠ রাতের বাতাসের মাতাল গানে মুখোমুখি ভেসে যাই- ডুবে যাই- মরে যাই দুজনায়... হাতটা ধরো, আমার অনামিকায় তোমাকে রেখেছি যতনে...! উপরের লাইনগুলো লিখতে একজন কবিকে পার হতে হয়েছে তিন দশকেরও বেশি সময়ের পথ। কবি রোকসানা রহমান। তাঁর নতুন কবিতার বই- অনামিকায় রেখেছি যতনে-। রোকসানা রহমানের কবিতাগুলো পড়ে সবচেয়ে যেটা ভালোলাগলো সেটা তার সমকালীন বোধ। যে কবি তার সমকাল ও সময়কে প্রতিনিধিত্ব করে না তার লেখা আদৃত হয় না। রোকসানা রহমান নিত্যদিনের শব্দ ও ভাষাকে কবিতায় রূপ দিতে চেয়েছেন। বোদলেয়ার এবং রাঁবো পরবর্তী কবি গিয়ম আপোলিনিয়র তিনি মনে করতেন গীতিময়তার নতুন রূপ দিতে হবে। স্যুররিয়ালিজম এবং কিউবিজমের শুরু তার হাতে। তিনিও সমকালীনতা এবং নিজ যুগের কণ্ঠস্বর হতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন- যে শিল্পী তার নিজের যুগে বাস করে না তাদের আমি ঘৃণা করি। সেক্ষেত্রে রোকসানা রহমান তাঁর সময়ের কথা উচ্চারণ করতে চান, তার কবিতার কয়েকটি লাইন উপরে উদ্ধৃত করেছি। শুনতে কি পাও শব্দের সফর? এই জিজ্ঞাসা দারুণ এক নান্দনিকতা দেয়। আমরা ভাবতে পারি কবিতার শব্দেরা পর্যটক। ভালোবাসার অন্বেষণ তার কাব্যিক অভিযাত্রার অংশ। অনায়াসে আমাদের চোখের সামনে ছবি এঁকে দেন শীত কুয়াশার ডিঙি, মৃগয়ার মাঠে প্রদীপ্ত চাঁদ, নীলকণ্ঠ রাতের বাতাসে গান এক রোমাঞ্চকর ভাবালুতায় ভরিয়ে দেয় আমাদের মন।
সম্পাদক পরিচিতি: মোছা. রোকসানা রহমান ১৯৭৮ সালের ৬ জুলাই রাজবাড়ি জেলায় রায়নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মৃত মো. আ. আজিজ মোল্লা, মাতা- মোছা. আমেনা বেগম, স্বামী- মো. মজিবর রহমান বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত। তিনি ১৯৯৪ সালে এসএসসি এবং পার্বতীপুর কৃষি ডিপ্লোমা কলেজ থেকে কৃষি ইনিঞ্জনিয়ারিং পাশ করেন। তিনি এক কন্যা সন্তানের জননী। তার প্রথম যৌথ কবিতার বই 'কবিতায়ন'। অবসর সময়ে তিনি গান শুনতে, কবিতা পড়তে ও লিখতে পছন্দ করেন।