কিছুদিন আগে প্রফেসর সামাদী যোগাযোগ করেন। তিনি আমার নাটক 'তাজমহল কা টেন্ডার'(তাজমহলের টেন্ডার) বাংলায় অনুবাদ করতে চাইছিলেন। এই ভেবে আনন্দ হয়েছিল যে ভারতে প্রচলিত এই নাটকের সঙ্গে এবার বাংলাদেশের ভাই—বোনেরাও পরিচিত হতে পারবেন। সে নাটক প্রকাশিতও হয়ে গেছে। সামাদীজীকে অনেক অনেক অভিনন্দন। এখন তিনি আমার নাটক 'দুসরা অধ্যায়'(দ্বিতীয় অধ্যায়) অনুবাদ করছেন। প্রফেসর সামাদীর আগ্রহ, আমি এই নাটক সম্পর্কে কিছু বলি। সাধারণত নাট্যকারের যা কিছু বলবার থাকে নাটকেই তা বলা হয়ে যায় এবং নাটকের চরিত্রই নাট্যকারের ভাবনার অভিব্যক্তি ঘটায়। এর বেশি তাঁর আর কিছু বলবার বিষয় থাকারও কথা নয়। বিশেষত তখন যখন নাটক অত্যধিক গভীর ভাবনার সঙ্গে, সমাজের স্থাপিত মূল্যবোধের সঙ্গে এবং সংবেদনশীলতার সঙ্গে সম্পর্কিত। একারণেই 'দুসরা অধ্যায়' নাটক সম্পর্কে কিছু বলতে আমি সবসময় সংকোচ বোধ করি। তবুও... এই নাটককে দু’স্তরে দেখা যেতে পারে। প্রথম দৃষ্টিতে একে কেবল প্রেম—প্রসঙ্গ বলে মনে হতে পারে। এই প্রকরণ স্থাপিত সামাজিক বন্ধনের বাইরে হওয়ায় জিজ্ঞাসা এবং কৌতূহলের বিষয় হয়ে যায়। সর্বদা ছিল, সর্বদা থাকবে। এটা কি উচিত? মর্যাদার কী হবে? অভয় এবং নীরজার হঠাৎ দেখা হয় এবং তারা এতটাই কাছে চলে আসে যে পুরনো সম্পর্ককে ছেড়ে একটি 'দ্বিতীয় অধ্যায়' শুরু করবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। এমনটা কেন হয়? আর সামনে তারা কী করবে, কীভাবে করবে? এই প্রশ্ন নাটককে মনোরঞ্জক করে রাখে। অনেক দর্শকের মনে হয় যে কখনো না কখনো সেও এই নাটকের চরিত্র ছিল এবং সম্ভবত এখনো আছে, হয় অভয় না হয় নীরজা। কিন্তু তার ওপরে গিয়ে দেখা গেলে কিছু প্রশ্ন উঠে আসে। আমরা যা করছি তার ওপর কি আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে? এমন কী করে হয়ে যায় যে হঠাৎ পরিস্থিতি আমাদের অন্য কোনো দিকে নিয়ে যায় আর আমরা আমাদের প্রকৃতির বশীভূত হয়ে কালচক্র দ্বারা নির্ধারিত পথে চলতে বাধ্য হয়ে যাই? ভগবত—গীতার বিষয় তো এই।