ফ্ল্যাপে লিখা কথা কার্টুনিস্ট রনবী ওরফে চিত্রী রফিকুন নবীর জন্ম চাঁপাইনওয়াবগঞ্জে ১৯৪৩ সালে। শৈশব-কৈশোর কেটেছিল ঘুরে ঘুরে, বাবার চাকরির পায়ে পায়ে, বাংলাদেশের এখানে-ওখানে। ছবি আঁকার পরিবেশ ছিল ঘরেই : তাঁর পিতৃদেব অবসর পেলেই নিজের খেয়ালে ছবি আঁকতেন। পিতার প্রবণতা পুত্রে বর্তেছিল সকলের অলক্ষ্যে।
ঢাকার সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী পোগেজ স্কুল থেকে প্রবেশিকার দরজা পার হয়েই সোজা সেদিনের ইন্সটিটিউট অব ফাইন আর্টস-এ। তখন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বেঁচে, তাঁর নিজের হাতে-গড়া বিদ্যায়তনের কাণ্ডারী। তখন শিল্পী ‘পটুয়া’ কামরুল হাসান ছেলেমেয়েদেরকে হাতে ধরে ধরে গ্রাফিক্স নকশা শেখাচ্ছেন। আরো জড়ো হয়েছেন পরবর্তীকালের বিভিন্ন দিকপাল, ঐ শিক্ষায়তনকে ঘিরেই : সফিউদ্দিন আহমদ, মোহাম্মদ কিবরিয়া, রশীদ চৌধুরী, আমিনুল ইসরাম, কাইয়ুম চৌধুরী, কাজী আবদুল বাসেত, আনোয়ারুল হক, খাজা শফিক আহমদ, হাবিবুর রহমান, শফিকুল আমিন। এঁদের অনেকেই আজ নেই। কিন্তু এঁদের সম্মিলিত স্নেহে, নির্দেশে, অনুপ্রেরণায়, সদ্য স্কুল-ছেঁড়া এক কিশোরের মুখে ভবিষ্যৎ-শিল্পীর কল্পনাচৈতন্য ক্রমশ সেঁটে বসেছে।
রফিকুন নবীর শিক্ষাগ্রহণ দেশে ও দেশের বাইরে ছাড়ানো। ছাত্র অবস্থাতেই এশিয়া ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পেয়েছিলেন (১৯৬২-৬৪)। পরে গ্রিক সরকারের বৃত্তি নিয়ে স্নাতকোত্তর শিক্ষালাভের জন্য এথেন্সে থেকেছেন প্রায় চার বছর। স্নাতক হয়ে ১৯৬৪-তে যখন বেরিয়েছিলেন তদ্দিনে তাঁর শিক্সাসত্র নাম পাল্টে হয়ে গেছে সরকারী চারুকলা মহাবিদ্যালয়; আজ যখন সেখানে নিজে পড়াচ্ছে, শেখাচ্ছেন তখন আবার তা হয়ে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ‘চারুকলা ইন্সটিট্যুট’।