নিঃসঙ্গতারও অনেক বৈচিত্র্য থাকে। একটি নিঃসঙ্গ বৃক্ষ একই বৃত্তের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ আকাশের শত শত গ্রহ-নক্ষত্র, ভুবন জুড়ে ছড়িয়ে থাকা জ্যোৎস্না, চমকিত সূর্যরশ্মি--সবকিছু বৃক্ষটিকে জড়িয়ে রাখে আত্মার আত্মীয়ের মতো। নিঃসঙ্গতার সেই আশ্চর্য মাধুরী ছুঁয়ে গেছে দিল আফরোজ বিনতে আছির এর ‘নিঃসঙ্গ শুকতারা’ কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতায়। শুকতারা কিংবা সন্ধ্যাতারা খুব একা। আকাশের এক কোণে একাই উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে থাকে। কবি সেই শুকতারার সঙ্গী হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সহজ-সাবলীল ভাষায়Ñ‘এই নিঃসঙ্গ শুকতারার সঙ্গী হতে পারো তুমি, নির্দ্বিধায় গ্রহণ করতে পারো অসুখের নিমন্ত্রণ, এই মিষ্টি ভোরে, সুখ ও অসুখের গভীরতায়।’ জীবনের বাঁকে বাঁকে ভালোবাসা, শূন্যতা, সংকট এবং সম্ভাবনায় নিঃসঙ্গ কবি কল্পনার প্রিয়জনকে পাশে বসিয়ে কবিতার আবহে গল্প করে গেছেন প্রতিটি কবিতায়। নিঃসঙ্গতার চর্চা বাংলা কবিতায় অনেক হয়েছে। কিন্তু যাপিত জীবনের কোলাহলের ভেতরে ধুলোয় ধূসরিত শহরের কবি যেন নির্মাণ করেছেন শান্তির নতুন এক সবুজ উদ্যান। ‘নিঃসঙ্গ শুকতারা’ কাব্যগ্রন্থ আপনাকেও বিপুল জনারণ্যে নির্জনতার অপূর্ব স্পর্শে মোহিত করবে। আপনার বিরহী একাকী মন বহু রঙে ছড়িয়ে পড়বে দিগন্ত থেকে দিগন্তে।