তিনি উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গবেষণার পাশাপাশি ভ্রমণ ও উপমহাদেশের ইতিহাস, বিশেষ করে মোগল ইতিহাসের প্রতি তাঁর যথেষ্ট আগ্রহ ও আবেগ রয়েছে। তিনি মোগল ইতিহাস নিয়ে গবেষণা ও চর্চা অব্যাহত রেখেছেন। সেই চর্চা ও গবেষণার ফসল এই গ্রন্থ ‘তাজমহলের ইতিবৃত্ত’। তাজমহল মূলত সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজমহলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ শ্বেত পাথরে নির্মিত একটি বিশ্ববিখ্যাত দৃষ্টিনন্দন সমাধি। ভারতের উত্তর প্রদেশের আগ্রার যমুনা নদীর মৃদু বাঁকা দক্ষিণ তীরে প্রায় ছয়শত বছরের অধিক সময় ধরে এই সমাধি নিজের রোমাঞ্চ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ২২ হাজারের অধিক শ্রমিক এই বিখ্যাত স্থাপনাটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে ২০ বছর সময় নিয়েছিলেন। সৌধটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে এবং শেষ হয় ১৬৫৩ খ্রিষ্টাব্দে। তাজমহল তাঁর অত্যাশ্চর্য সৌন্দর্যের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে অরাধ্য স্মৃতিস্তম্ভগুলোর মধ্যে একটি। সেইসাথে বিশ্বের সপ্ত-আশ্চর্যের একটি হিসেবে গণ্য। তাজমহল ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত ও স্বীকৃত। এর কেন্দ্রে মমতাজমহল এবং শাহজাহান উভয়েরই সমাধি আছে। স্ত্রীর প্রতি সম্রাট শাহজাহানের ভালোবাসার চিরন্তন অনুস্মারক তাজমহল। প্রেমের উত্তরাধিকার হিসেবে পরিগণিত এই তাজমহলের নির্মাণের সময়কার তুলনায় এখন আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরত্বপূর্ণ। ইন্দো-ইসলামিক সমাধি-স্থাপত্যের পরিসরে নিখুঁত সম্প্রীতি ও দুর্দান্ত কারুকার্যের মাধ্যমে সেরা স্থাপত্য এবং শৈল্পিক কৃতিত্বের প্রতিনিধিত্ব করে তাজমহল। তুরস্কের ওস্তাদ ঈশা আফেন্দি তাজমহলের প্রধান স্থপতি। তাজমহলের বিস্ময়কর সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন। ইউনেস্কো ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে এই অনন্য সমাধিসৌধটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থাপনা হিসেবে মনোনীত করে। প্রমাণ্য দলিলসহ তাজমহলের আদ্যোপান্ত বর্ণিত হয়েছে এই গ্রন্থে।