ভারতবর্ষে মানবতাবাদী আন্দোলন এবং রেসেসাঁ-র প্রবক্তা এম. এন. রায়। পুরা নাম মানবেন্দ্রনাথ রায় (১৮৮৭-১৯৫৪)। লেনিন, স্ট্যালিন, ট্রটস্কি, বুখারিন প্রমুখরে সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। তাসখন্দে গোড়াপত্তন করেন ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টিও ভিত। সন্ত্রাসবাদ থেকে মার্কসবাদ, মার্কসবাদ থেকে মানবতাবাদী আন্দোলন গড়ে তোলা মানবেন্দ্রনাথ রায়-এর রাজনৈতিক ধারার ক্রমবিকাশ। কেবল আন্দোলন-সংগঠন নয় লিখেছেন অজস্র তাত্তিক গ্রন্থ। সতেরোটি ভাষায় দক্ষ ছিলেন তিনি। ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিস, জার্মানি ভাষায় তিনি অনেকগুলো গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর লেখা ৬৭টি গ্রন্থ এবং ৩৯ পুস্তিকার সন্ধান পাওয়া যায়। এর বাইরে বিভিন্ন ভাষায় রচিত তাঁর বহু প্রবন্ধ নানা দেশের পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইন্ডিয়া’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। এম. এন. রায় ‘ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমিকা’ লিখেছেন ১৯৩৯-এর দিকে। এসময় তিনি কাজ করছিলের ‘জাতীয় কংগ্রেস’-এর হয়ে। চেষ্টা করছিলেন অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে কংগ্রেসকে গড়ে তোলার। তারই ধারাবাহিকতায় রচনা করেন ‘ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমিকা’ গ্রন্থ। এই গ্রন্থ প্রকাশিত হলে সচেতন মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় হয়ে ওঠেন এম. এন. রায়। ‘ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমিকা’ আজও সমাজে অসাম্প্রদায়িত চেতনা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
মানবেন্দ্রনাথ রায় (২১শে মার্চ, ১৮৮৭ - ২৫শে জানুয়ারি, ১৯৫৪) ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। তার আসল নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। বিপ্লবী কাজ করতে গিয়ে তিনি অসংখ্য ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। মি. মার্টিন, মানবেন্দ্রনাথ, হরি সিং, ডা. মাহমুদ , মি. হোয়াইট, মি. ব্যানার্জী ইত্যাদি। তবে এম. এন. রয় নামেই মানবেন্দ্রনাথ রায় সমধিক পরিচিতি। তিনি ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই অক্টোবর সোভিয়েত ইউনিয়নের তাসখন্দে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। তিনি সমাজতাত্তিকদের কাছে একজন ‘র্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট’ হিসেবে পরিচিত।