এবছর প্রকাশিত হয়েছে শিকদার ওয়াহিদুজ্জামানের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘পড়তে পারলাম না তোমাকে’। এই কাব্যগ্রন্থটি একেবারে নিখাদ ও খাসা রোমান্টিক ধাঁচের কবিতায় ঠাঁসা। তবে হাল আমলের দুর্বোধ্য শব্দের জটিল বুননে অস্পষ্টতা নয় বরং সবার সহজ-সরল ও খুব চেনা-জানা শব্দে সকলের মনের কথামালায় যে অসাধারণ কাব্যগ্রন্থ ‘পড়তে পারলাম না তোমাকে’ তিনি সাজিয়ে তুলেছেন তা সত্যিই কবিতার পাঠক খুব সহজেই পড়তে পারবেন এবং উপলব্ধি করতে পারবেন। শিকদার ওয়াহিদুজ্জামানের কাব্যভাষা ও কাব্য নির্মাণের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সহজ সরল বাঙালির আটপৌরে জীবনের সাথে প্রতিনিয়ত জড়িয়ে থাকা ও ব্যবহৃত হওয়া শব্দগুলোর সরল উপস্থাপনায় মানব-মানবীর হৃদয় থেকে উত্থিত ও হৃদয়-মথিত চিরকালীন আবেগটুকু তুলে এনে কবিতা সৃষ্টি করা। তাঁর প্রেমের কবিতা সৃষ্টির এই অভিনব ভাবনাটি একবিংশ শতাব্দীর ধাবমান যান্ত্রিক মানুষের জন্য এক পশলা হিমেল বাতাসের মতো হৃদয়-মনে প্রেমের প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দেবে বলে আমার বিশ্বাস। নানা রকম অ্যাপস ও প্রযুক্তি নির্ভর নতুন প্রজন্মেকে শিকদার ওয়াহিদুজ্জামানের এই কাব্যগ্রন্থ খানিক বইমুখী করবে বলে আমার বিশ্বাস। মানব সভ্যতা যতদিন থাকবে, পৃথিবী যতদিন থাকবে নর-নারীর প্রেম ভালোবাসা ততদিন থেকে যাবে। যুগে যুগে মানব মানবীর প্রেমের প্রকাশ বদলেছে হয়তো, বদলাবে আরো। কিন্তু প্রেম শ্বাশ্বত ও চির সুন্দর। প্রেমের এই চিরকালীন মহিমা ঝংকৃত হয়েছে তাঁর পড়তে পারলাম না তোমাকে’ কাব্যগ্রন্থে! একই সঙ্গে চাঁদের উল্টো পিঠের মতো প্রেমহীন জীবন কতোটা বেদনা বিধুর হতে পারে সেই বিরহী সুরও আছে তাঁর এই গ্রন্থের অনেক কবিতায়। সহজ ভাষায় ও শব্দের সরল বিন্যাসে লেখা এরকম কাব্যগ্রন্থ সত্যিই অনবদ্য ও বিরল সৃষ্টি। এই কাব্যগ্রন্থটিকে অনেক বেশি চিত্তাকর্ষক করেছে বিরহের কবিতাগুলো। মানুষের প্রেমময় ও স্বপ্নময় জীবন থেকে ভালোবাসার আকস্মিক বিলিন হওয়ার ফলে প্রেমিক-প্রেমিকার হৃদয়ে যে বিষাদ-বেদনা আর অভিমান জমাট বেঁধে থাকে সেই বেদনার্ত সুর এই কাব্যগ্রন্থের পাঠক হৃদয়কে আর্দ্র ও আচ্ছন্ন করবে বলে আমি আশাবাদী। আমি শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান এর ‘পড়তে পারলাম না তোমাকে’ কাব্যগ্রন্থের সার্বিক সাফল্য প্রত্যাশা করছি।