ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা ‘আমি বলি দুই মা। ম্যাক্সিম গোর্কির মা আর আনিসুল হকের মা।..... এখন দুই মা যথার্থ মা হয়ে উঠেছেন আমার কাছে।’ সরদার ফজলুল করিম ‘ফাদ আমি সত্যি এক নিঃশ্বাসে পড়েছি। শহীদুল জহিরের জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার পর আর কোনো উপন্যাস এতটা রুদ্ধশ্বাসে, এতটা অভিভূত হয়ে পড়িনি। আনিসুল হক তৈরি করেন কথার জাদু এবং জাদু বাস্তবতা।’ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ‘কাহিনী বিন্যাসের ক্ষেত্রে আনিসুল হকের পরিমিতিরোধ, ঋজু নির্মেদ গদ্য এবং বর্ণনার গতিময় ভঙ্গি তার অন্যান্য উপন্যাসের মতো আয়েশামঙ্গলকেও সমৃদ্ধ করেছে। শাহরিয়ার কবির ‘যে লেখক জীবনকে দেখতে জানেন, গল্পের বুনোন ও কাঠামো নিয়ে যিনি ভাবেন, যিনি জানেন পরিবেশ পদ্ধতিটি গুরুত্বপূর্ণ এবং যে লেখক একই সঙ্গে তাঁর সময় ও সমাজসচেতন হয়েও চিরকালের একটি আবহ তৈরি করতে পারেন, প্রচলিত ধারার খুব একটা বাইরে না গিয়েও তিনি যে একটা অভিনবসুন্দর নির্মাণ করতে পারেন, ফাঁদ-এ আমরা সেই ছবিটি পাই।’ মঈনুল আহসান সাবের ‘বাংলাদেশের গরিব মানুষ, ক্ষেতমজুর কেমন দিন কাটাচ্ছে, কেমন আছে ক্ষমতাবান মানুষ, তারই ময়নাতদন্ত নিধুয়া পাথার। আনিসুল হকের লেখার রসায়ন সত্যি ব্যতিক্রমী। এই রসায়নে সবচেয়ে দামি অংশ ভাষা।’ অর্ধেন্দু চক্রবর্তী আনিসুল হক এ প্রজন্মের মেধাবী শিল্পী, তার জীবনবোধ, সমাজবোধ, চরিত্রচিত্রন ইত্যাদি মৌল বিষয়গুলোতে চমৎকার কুশলতার পরিচয় দিয়েছেন এ উন্যাসে। আহমাদ মোস্তফা কামাল সামাজিক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রিক প্রেক্ষিতবিচারের বৃষ্টিবন্ধু সাহিত্যের পাঠকের গণ্ডি পেরিয়ে আরো অনেক দূর পৌঁছাতে পারে। আকারে ছোট হলেও বৃষ্টিবন্ধু একটি অসাধারণ উপন্যাস। মশিউল আলম সূচিপত্র *ফাঁদ *বৃষ্টিবন্ধু *বেকারত্বের দিনগুলিতে প্রেম *আয়েশা মঙ্গল *আমার একটা দুঃখ আছে *নিধুয়া পাথার *চিয়ারি বা বুদু ওরাঁও কেন দেশত্যাগ করেছিল *মা *ক্ষুধা এবং ভালোবাসার গল্প *দুঃস্বপ্নের যাত্রী
আনিসুল হক, বাংলাদেশে গত শতাব্দীর আশির দশকে আবির্ভূত হওয়া একজন প্রখ্যাত কবি, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও সাংবাদিক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গদ্যকার্টুন, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনী, শিশুসাহিত্যসহ সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে রয়েছে তার সাবলীল বিচরণ। বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। আনিসুল হকের জন্ম ১৯৬৫ সালের ৪ মার্চ নীলফামারীতে। শিশু মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক বাবার অনুপ্রেরণায় ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ জন্মেছিলো লেখালেখি আর ছবি আঁকায়। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন প্রথম কবিতার বই ‘খোলা চিঠি সুন্দরের কাছে’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। আনিসুল হক এর বই প্রকাশের কালটি ছিলো উত্তাল স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের সময়। আনিসুল হক এর বই সমূহ প্রেমের প্রতি পক্ষপাত করলেও একইসাথে সেসময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার চিত্রও ফুটিয়ে তুলেছে। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘আমি আছি আমার অনলে’, ‘আসলে আয়ুর চেয়ে বড় সাধ তার আকাশ দেখার’, এবং ‘জলরংপদ্য’। মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘মা’, আনিসুল হক এর বই সমগ্র এর মধ্যে পাঠকের মনে সবচেয়ে বেশি দাগ কেটেছিল। এছাড়াও ‘বীর প্রতীকের খোঁজে’, ‘নিধুয়া পাথার’, ‘আয়েশামঙ্গল, খেয়া’, ‘ফাঁদ’, ‘বেকারত্বের দিনগুলিতে প্রেম’, ‘ভালোবাসা আমি তোমার জন্য কাঁদছি’, ‘ফাল্গুন রাতের আঁধারে’ তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। বিভিন্ন স্বনামধন্য পত্রিকার সম্পাদকের ভূমিকা পালন করেছেন দীর্ঘদিন, এখনও লিখে যাচ্ছেন পত্রিকার কলাম। লিখেছেন বেশ কিছু টেলিভিশন নাটক ও সিনেমার চিত্রনাট্যও। কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন বাংলা সাহিত্যের আধুনিক এই লেখক।