ইসলাম, আজকের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান বিশ্ব ধর্মের, জাহেরি (বাহ্যিক) এবং বাতেনি (অভ্যন্তরীণ) উভয় দিকই রয়েছে । ফিকহ বা বিচারশাস্ত্র জাহেরি বা বাহ্যিক এবং ইহসান / ইরফান বা তাসাউফ (সুফিজম) এর সাথে অভ্যন্তরীণ বা বাতেনি দিক সম্পর্কিত। উলেমা বা প-িতগণ ফিকাহ বা বিচারশাস্ত্রের নেতৃত্ব দেন,আর ঐতিহ্য বলে হযরত আলী ইবনে আবি তালিবের মাধমে সুফী বা বাতেনি ধারার প্রবর্তন। কাদেরিয়া তরিকা এমনি একটি সুফী যেটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা বিবি ফাতিমা (রাঃ) এবং আলী ইবনে আবি তালিবের (রাঃ) বংশধারার প্রতিনিধি হযরত সাইয়্যেদ আব্দুল কাদির জিলানী (রঃ) এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ও দিকনির্দেশিত। কাদেরিয়া তরিকা দশম শতকে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে । সতেরো শতকের শেষ দিকে সিরিয়ার হামা থেকে দীর্ঘ যাত্রার পর এই তরিকার প্রতিষ্ঠাতার বেশ কয়েকজন বংশধর বাংলায় আগমন করেন। তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের মঙ্গলকোট প্রথম এবং তারপর মেদিনীপুর ও কলকাতায় বসতি স্থাপন করেন। এই পরিবারের একজন মহান ওলী ছিলেন সৈয়দ শাহ এরশাদ আলী আল কাদেরী (রঃ), যার সংক্ষিপ্ত জীবনী এখন আমাদের হাতে। ড. সৈয়দ সাদরুল হুদা এই মহান ওলীর জীবনের সুনির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে চমৎকার কাজ করেছেন। সৈয়দ শাহ এরশাদ আলী আল কাদেরী (রঃ) ছিলেন একজন আলেম, আরিফ এবং একজন সমাজকর্মী। বিভিন্ন বিশ্বাস, ভাষা এবং সংস্কৃতির মানুষের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল। তাঁর মানবতা, উদারতা, ন্যায় পরায়ণতা, ও আধ্যাত্মিকতা এখনো দৃষ্টান্ত স্বরূপ আলোচিত হয়। তিনি একজন সফল সুফি কবি ছিলেন এবং অনেক হামদ (আল্লাহর প্রশংসায়), নাত (নবীর প্রশংসায়), মানকাবত (ওলীদের প্রশংসায় কবিতা) এবং মারসিয়া (ইমাম হোসেন (রাঃ) এবং অন্যান্য শহীদদের স্মরণে রচনা করেছিলেন। ড. সৈয়দ সাদরুল হুদা ও তার পরিবারের পূর্বতন সদস্যরা সৈয়দ শাহ এরশাদ আলী আল কাদেরী (রঃ) এর ভক্ত যা এই জীবনী গ্রন্থটির বিশুদ্ধতার প্রমান দেয় । এটি নিছক একটি জীবনী নয় এটী আমাদের অনেকেরই আধ্যাত্মিকতার তৃষ্ণা নিবারণ করবে। আমরা লেখককে তার কঠোর পরিশ্রম এবং চমৎকার উপস্থাপনার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
Title
বাংলার মহান সাধক সৈয়দ শাহ্ এরশাদ আলী আল কাদেরী (রহঃ)