ফ্ল্যাপ বন্ধু তৌফিকের রুবাইগুলো পড়ে বেশ উপভোগ করেছি। এ বিষয়ে বলার আগে ওর সঙ্গে পরিচয় ও একসাথে কাজের বিষয়ে কিছু বলা প্রাসঙ্গিক মনে করি। বন্ধু বোরহান মাহমুদের আহŸানে ও ক্লাব ৮৫-এর তত্ত¡াবধানে সনেট লেখার একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেখানে আমার দায়িত্ব ছিল সনেটে লিখবার নিয়মগুলো এবং ছন্দ বিষয়ে বিশেষ করে অক্ষরবৃত্ত ছন্দ নিয়ে বন্ধুদেরকে সহযোগিতা করা। বিষয়টি গুরুত্ব নিয়ে সকলে করল। কিন্তু আমার একার পক্ষে সনেটগুলো সংশোধন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। আমি খেয়াল করলাম একজন আমার পাশাপাশি অন্য বন্ধুদের কবিতা সংশোধনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে নিলো এবং সে চমৎকারভাবে কাজটি এগিয়ে নিলো। এই হলো আমাদের বন্ধু তৌফিক। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। কিছুদিনের মধ্যে সে আমার থেকে মাত্রাবৃত্ত ও স্বরবৃত্ত ছন্দও শিখে নিলো। শুরু হলো তার ছন্দে কবিতা লেখা। এবার আমি তাকে বিভিন্ন ছন্দে লিখবার আহন করলাম। বিস্ময়কর দ্রততায় সে আমার এবং অন্য বই থেকে সহযোগিতা নিয়ে একে একে মুক্তকছন্দে, একাবলী, একপদী, ত্রিপদী, চৌপদী, অমিত্রাক্ষর, গদ্যছন্দে তার কবিতাগুলো সাবলীলভাবে লিখতে শুরু করল। ছন্দে সাবলীলতা, শব্দচয়নে দক্ষতা তার কবিতাগুলোকে কবিমহলে দারুণভাবে নাড়া দিলো। ইতোমধ্যে সে আমাদের ক্লাবের অন্যতম কবি ও সম্পাদক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হলো। পরবর্তীতে আরেক বন্ধু আরিফ রহমানের আহŸানে ক্লাবের প্রায় সকল কবি রুবাইয়াৎ লেখায় সাড়া দিলো। তবে তৌফিক দারুণ দক্ষতায় তার ১৪২টি রুবাই একসাথে করে একটি বই-ই বের করে ফেলল। প্রথমদিকের রুবাইগুলোতে প্রেম, প্রকৃতি, ধর্ম, সৃষ্টিকর্তাকে ঘিরে আবর্তিত হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাম্প্রতিক বিষয়গুলো তুলে ধরেছে সে। সাম্প্রতিক বিষয়গুলো রুবাইয়াতের সাথে কতটা যায় সে বিতর্ক থাকতে পারে তবে বিষয়গুলো ভাবায়, প্রতিবাদী করে তোলে। আমি বলব ছোটো-ছোটো রুবাইগুলো পড়ে আপনাদের প্রতিবাদী করে তুলবে, ভাবাবে, আবেগে ভাসাবে, আনন্দে আপ্লুত করবে নিশ্চিত। মিথুন মোস্তফা