নির্বাচিত কবিতা সালাউদ্দিন বাদলের কবিসত্ত্বার এক ব্যতিক্রমী পরিচয়। কবিতাগুলোর পংক্তিমালা সাজানো হয়েছে সহজ-সরল শব্দে, যা যেকোনো শ্রেণির পাঠককে নাড়া দেবে। তাঁর অভিব্যক্তি, সংবেদনশীল মানসিকতা অনন্য ব্যঞ্জনায় মূর্ত হয়ে উঠেছে প্রতিটি কবিতায়। দেশ, মানুষ, প্রকৃতি ও নগরজীবন নিয়ে তিনি যেমন সচেতন তেমনি নারীর প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন অবলীলায়। কোথাও কোথাও স্মৃতি তাঁকে নাড়া দিয়েছে। তাঁর কবিতায় মানুষের অতীত-বর্তমান- ভবিষ্যতের মেলবন্ধন দেখা যায়। ফলে তাঁর কাব্যগ্রন্থ পাঠে কোনো ক্লান্তি আসে না। এক অনির্বচনীয় আনন্দধারায় অবগাহন করেন পাঠক। তাঁর কবিতায় প্রেম ও রাজনীতি উঠে এসেছে সমানভাবে। দুর্বোধ্যতা আধুনিক কবিতাকে পাঠকের কাছ থেকে ক্রমে দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। সালাউদ্দিন বাদল কবিতায় সেই দূরত্ব কমানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁর কবিতার সাবলিল বিন্যাস, বিষয়বস্তুর অর্থময়তা ও নান্দনিকতা পাঠককে সহজেই আকর্ষণ করে, অনুপ্রাণিত করে, জাগিয়ে তোলে, আবার আনন্দ দেয়। সালাউদ্দিন বাদল-এর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে—যুদ্ধ শেষ হয়নি, মুক্তির রূপালী বাতাস, আমরা জেগে আছি, সালাউদ্দিন বাদলের কবিতাসমগ্র, ভালোবাসার কবিতা। কবিতা, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে বিশেষ অবদানের জন্য উল্লেখযোগ্য পদক/পুরস্কার/ সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। কবি গোবিন্দ স্মৃতি পদক, আমরা সূর্যমুখী সম্মাননা পদক, বিশ^ বাঙালি সম্মাননা পদক, স্বাধীন বাংলা স্মৃতি পুরস্কার, নতুন কুঁড়ি স্মৃতি পদক, কবি নজরুল স্মারক সম্মাননা, বাংলাদেশ সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ পুরস্কার, সাহিত্যে সম্মাননা পদক ২০২৩, দৈনিক মুন্সিগঞ্জের খবর, শেখ রাসেল স্মারক সম্মাননা, সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচার পদক এবং সিলভারডেল প্রিপারেটরী স্কুল পদক সেগুলোর মধ্যে উল্লেযোগ্য। তিনি রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে ফিলিপাইন, ভারত, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ড সফর করেছেন
সালাউদ্দিন বাদলের জন্ম ১৯৫২ সালের ১৩ নভেম্বর। পিতা মরহুম শফিউদ্দিন আহমেদ একজন সফল আইন ব্যবসায়ী ও মা উম্মে সালেমা খাতুন একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন। জন্মঃ বিক্রমপুরের আবদুল্লাপুরে। বসবাস করেন ঢাকার ওয়ারীতে নিজ বাসভবনে। তাঁর কর্মময় জীবন রাজনীতি ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ, প্রচার, দপ্তর ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, আওয়ামী শিল্পীগােষ্ঠীর সভাপতি; সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি । জাতির প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে যেমন: '৬৯, '৭০, ৭১, '৭৫-পরবর্তী সময়, '৯০-এর গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলনে তার ভূমিকা উল্লেখযােগ্য। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ আয়ােজিত ‘জনতার মঞ্চ’-এর অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও পরিচালনায় তার অনন্য ভূমিকা ছিল। কবিতা, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য তিনি কবি নজরুল স্মারক সম্মাননা, বাংলাদেশ সহিত্য সাংস্কৃতি সংসদ পুরস্কার, নতুন কুঁড়ি স্মৃতি পদক, স্বাধীন বাংলা স্মৃতি পুরস্কার, আমরা সূর্যমুখী সম্মাননা পদক, বিশ্ব বাঙালি সম্মাননা পদক, কবি গােবিন্দ স্মৃতি পদক ও মুক্তিযােদ্ধা সংহতি পরিষদ সম্মাননা পদক লাভ করেন। তিনি রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে ফিলিপাইন, ভারত, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ড সফর করেছেন।