একজন মানুষের বড় ধর্ম পালন হয় সেবায়। সেবাই মানুষের পরম ধর্ম। ধর্ম চোখে দেখা যায় না। কর্তব্যকর্মে, আচার-আচরণে, চালচলনে, কথাবার্তায় বুঝা যায় মানুষের আসল পরিচয়। আল্লাহর দেওয়া বিধি-বিধান কীভাবে সমাজে ও জীবনে অতি সহজে সুপরিবর্তন আনে; কীভাবে মানুষের ধ্যান-ধারণা, চিন্তা, কৃষ্টি ও কালচারে আধুনিকায়ন ঘটায় এবং দেশ, জাতি মানবসমাজকে সচেতনতায় উদ্বুদ্ধ করতে পারবে এমন ভাবধারা থেকেই এই বইটির অবতারণা। আমার দীর্ঘদিনের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফসল এই বই প্রকাশের শুভক্ষণে আল্লাহতায়ালার দরবারে শতকোটি শুকরিয়া আদায় করি এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করছি আমার জান্নাতকামী মা-বাবার প্রতি। বইটি সকলের কাছে গ্রহণীয় বরণীয় হলে আমার প্রত্যাশা পূরণ হবে। বইটির বর্ণনায় দেখা যাবে ১৪ লাইন, ১৬ লাইন এবং ২০ বা অধিক লাইন লিপিবদ্ধ আছে। বইটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে কোরআনের কথা, মানবাধিকারের বিষয়, সত্যের সন্ধান, যুগের প্রতি নির্দেশনা, তওবা, প্রার্থনা, যুদ্ধ, হত্যা, সাধনা, কালচার, আরাধনা, কল্পনা, দিন পরিসংখ্যান, আল্লাহর আদেশ-নিষেধ, মাখলুকাত, রাজত্ব, স্বাধীনতা, স্বদেশপ্রেম এমন আরও অনেক বিষয়ের ধারণা। বইটি সাহিত্যের আওতায় পড়বে কিনা জানি না, তবে বর্তমান হালত পরিবর্তনের জন্য জীবনযাপন কেমন হওয়া উচিত এবং বিকাশ ভঙ্গি যেমন হওয়া বাঞ্চনীয় সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে। বইটি আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা।
আলহাজ মোঃ সাহিদুর রহমান বিএডিসির অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। তিনি ১৯৬৬ সালে এসএসসি পাশ করেন, ১৯৬৯ সালে এইচএসসি পাশ করেন, ১৯৭৪ সালে সালে প্রকৌশলী ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন, ১৯৭৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিএ পাশ করেন এবং ১৯৮৫ সালে এম.আই.ই উত্তীর্ণ হন। শৈশবে গোসাইডাঙ্গী-বর্তমান রসুলপুর গ্রাম, থানা-খোকসা, জেলা-কুষ্টিয়া থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। বাবা মরহুম কফিল উদ্দিন শেখ, মাতা মরহুমা কমলা সুলতানা। বাবার আর্থিক অসাচ্ছলতার কারণে অল্প বয়সেই চাকুরিতে যোগদান করেন। প্রথম নিযুক্তি পাকিস্তানি টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন সংস্থায় ১৯৬৭ সালে। চাকুরিরত অবস্থায় বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেই তার শিক্ষালাভ। ১৯৭৪ সালে বাবার অকাল মৃত্যুতে ভাই-বোনদের প্রতি দায়িত্বপালনে তৎপর ছিলেন। মেঝ ভাই নাজমুস ছালেহীন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিঃ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রধান নির্বাহী ছিলেন। তৃতীয় ভাই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রকৌশলী। ছোট ভাই গ্রামের স্কুলের শিক্ষক। লেখক ছাত্রজীবনের শুরুতেই ছাত্রি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি যশ্যের পুলিটেকনিক ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে বাংলাদশে কারিগরি ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শ পাড়ায় স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। তিনি সুদীর্ঘ আট বৎসর আদর্শ পাড়ার জামে মসজিদে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে আদর্শ জামে মসজিদে লাইব্রেরি ও ইসলামিক গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। সংসার জীবনে তিনি একজন সৌভাগ্যবান বাবা। বড় মেয়ে ফেরদৌস আরা অতিরিক্ত জেলা জজ। ছোট মেয়ে জান্নাত আরা সপরিবারে কানাডাপ্রবাসী হওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে দেশের বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বড় ছেলে যমুনা ব্যাংক লিঃ এর এসএভিপি ও শাখা ব্যবস্থাপক। ছোট ছেলে সোনালী ব্যাংক লিঃ এর সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার। ২০১৫ সালে তিনি সহধর্মিণীকে সাথে নিয়ে হজব্রত পালন করেন। উল্লেখ্য, তার সহধর্মিণী শাহানারা রহমান সংসার জীবনে আত্মত্যাগ এবং সন্তানদের সফলতার পিছনে তার আত্ম- নিয়োগ ও পরিশ্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে "আজাদ প্রোডাক্টস লিঃ" থেকে "রত্নগর্ভা মা" পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৯৭ সালে খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন তার প্রয়াত পিতার নামে ঝিনাইদহ শহরে স্বেচ্ছাসেবী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কফিল উদ্দিন ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটি স্ব-অর্থায়নে পরিচালিত। ২০১৪ সালে তিনি গঠন করেছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইসলামী রিসার্চ বাংলাদেশ। লেখকের ইচ্ছা বই ও প্রতিষ্ঠানের মাঝেই আজীবন মানবকল্যাণে নিয়োজিত থাকা। তার সেই প্রচেষ্টার প্রথম নিবেদন কবিতার বই "স্রষ্টা, সৃষ্টি ও মুক্তি"। এই বইটি একজন সৃজনশীল মানুষের ইসলামী শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তৈরিতে, নৈতিক শিক্ষার মান উন্নয়নে এবং সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে লেখকের দৃঢ় বিশ্বাস।