বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি নিয়মতান্ত্রিক রচনা নয়। এটি একটি বয়ানসংকলন। মুফতী মুহাম্মাদ আবুল কাসিম নোমানী হাফিজাহুল্লাহর শাইখ ও মুরশিদ দারুল উলুম দেওবন্দের তৎকালীন প্রধানমুফতী মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী রহ.-এর তত্ত্বাবধানে তার মুতাআল্লিকীন হজরতগণ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পবিত্র রমজানে সম্মিলিতভাবে ইতেকাফ করতেন। কোনো কোনো মসজিদে পুরো রমজান, কোনো মসজিদে রমজানের শেষদশক। ভারতের বেনারসের মালতিবাগস্থ মসজিদে বেলালেও এই আমল চলমান ছিল। হজরত মুফতী আবুল কাসিম নোমানী এর তত্ত্বাবধান করতেন, সেখানে হজরত গাঙ্গুহি রহ. এর অনেক ভক্ত-অনুরক্ত ও মুতাআল্লিকীন হজরত ইতেকাফের আমলে শরিক হতেন। ইতেকাফের এই মামুলাতকে আরো উপকারী এবং প্রাণবন্ত করার জন্য যিকির, তেলাওয়াত, তাসবিহাত ও নফল আমলের মতো ব্যক্তিগত আমলের পাশাপাশি ইজতিমায়ী আমলও চলত। ইজতিমায়ী আমলসমূহের মধ্যে অন্যতম ছিল তারাবিহর নামাজের পর হাদিসের দরস। পরিশুদ্ধ জীবনগঠনের পাথেয় হিসেবে প্রতিদিন নিয়মিত সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ ঘণ্টাব্যাপী হাদিসের দরস হত। হাদিসের দরস দিতেন মুফতী মুহাম্মাদ আবুল কাসিম নোমানী হাফিজাহুল্লাহ নিজে। ইতেকাফকারী ছাড়াও মসজিদের সাধারণ মুসল্লিগণ এবং শহরের বিভিন্ন এলাকার দীনদার শ্রেণি হজরতের এই হাদিসের দরসে শরিক হতেন। হজরত দরসের জন্য হাদিসের বিখ্যাত কিতাব মিশকাতুল মাসাবিহকে নির্বাচন করেন এবং কিতাবের তারগীব, তারহীব, তাযকিয়া, ইহসান, আদব-আখলাক এবং সমাজিক শিষ্টাচার বিষয়ক অধ্যায়গুলো থেকে হাদীসের মূলপাঠ তেলাওয়াত করতেন এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ হাদিসের সরল অনুবাদ উপস্থাপন করতেন। দরসগুলো টেপরেকর্ডারে ধারণ করা হত। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি হাদিসের সেই দরসেরই অংশ। এতে নয়টি দরস স্থান পেয়েছে।