মানুষের নানামুখী জীবনকে মুখ্য করে হৃদয়গ্রাহী ভাষা ও উপস্থাপনার মাধ্যমে যে মনোজ্ঞ কাহিনি চিত্রণ করা হয় তাকে মূলত গল্প বলে। গল্পকে অন্য সংজ্ঞায় জীবন বাস্তবতার নানারূপ উদাহরণ বা দৃষ্টান্তও বলা যেতে পারে। গল্পের পট বা উপাদান মানুষের ঘটিত ও ঘটমান জীবনপ্রবাহ থেকেই নেওয়া হয়। এই জন্য গল্প শুধুই গল্প না- জীবনের একেকটি খণ্ডিত চিত্র। যা শিক্ষা ও উপদেশমালায় ভরপুর থাকে। জীবনের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, তৃপ্তি-অতৃপ্তি, মিলন-বিরহ ও হর্ষিত-অনুশোচিত নানামাত্রিক উপাখ্যান আঁকা হয় গল্পের নাম ফেঁদে। গল্পকারকে তাই জীবনীকারও বলা যায়। এখন বিষয় হলো, বাস্তব জীবনের ঘটনা ও কাল্পনিক কাহিনিবিন্যাস কি এক? যদি মনে করা হয় কাল্পনিক কাহিনিটা কোনো না কোনো বাস্তব জীবনেরই প্রতিবিম্ব, তাহলে দু’টো একই। দু’টোই গল্প এবং শিক্ষাগ্রহণের উপাদান সম্বলিত। একটি অপরটির পরিপূরক। বাস্তব জীবন না থাকলে যেমন কাল্পনিক গল্প লেখা সম্ভব নয় ঠিক তেমনি উন্নত সাহিত্য দিয়ে রুচিশীল শিক্ষণীয় কাল্পনিক জীবন নির্মাণ না হলে বাস্তব জীমনেরও মূল্যায়ণ থাকবে না। ‘মাই ফোর্থ ওয়াইফ ইজ রেডি’ গল্পগ্রন্থটি বাস্তব, চাক্ষুষ ও লেখকের শ্রুত কিছু কাহিনিবিন্যাস। যেগুলো একইসাথে শিক্ষাপ্রদ ও বিনোদনমূলক। তবে গল্পগুলো পাঠ করে পাঠক মুগ্ধ ও শিহরিত হবে নিশ্চিত। পাঠককে কখনো হাসাবে কখনো কাঁদাবে। অন্তরে জ্বালাও তৈরি করবে এক অচিন ব্যথা। জীবন জগৎকে নতুন করে চিনতেও সাহায্য করবে। বইয়ের প্রতিটি গল্পই আক্ষরিক অর্থে কিছু মানুষ, জীবন ও সময়ের সাক্ষী। মূর্খতা, পাষণ্ডতা মানবজীবনের জন্য কেমন হুমকি- তার স্পষ্ট দলিল। নিছক গল্পগ্রন্থ হিসেবে নয় কয়েকটি জীবনের অখ্যান পাঠ হিসেবে বইটি সকলেরই পড়া উচিত।