বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার মাধ্যমেই বাংলা সাহিত্যের নতুন দিক উন্মোচিত হয়। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি সাহিত্যে তার বিচরণ ছিল অবাধ ও বিস্ময়কর। নজরুল গজল, খেয়াল ও রাগপ্রধান গান রচনা করে অসাধারণ খ্যাতি অর্জন করেন। তার রচিত অনেক কবিতায় আরবি-ফারসি শব্দের সার্থক ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। নজরুলের রচনায় সাম্যবাদী মানসিকতার পরিচয় ফুটে উঠেছে। তার মতে, একটি দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ধনী-দরিদ্র, উঁচু-নিম্ন, ধর্মীয়-জাতীয় বিভেদ দূর করা আবশ্যক । কাজী নজরুল ইসলাম মানবতার কবি ছিলেন। তার মতে, এই পৃথিবী সবার আবাসস্থল। পৃথিবীতে নানা বর্ণ, ধর্ম ও গোত্র রয়েছে। পৃথক পৃথক ধর্মগ্রন্থও রয়েছে। মানুষের সৃষ্টিকর্তা হলো বিধাতা। মানবধর্মের মূল বিষয় হলো—মানুষ মানুষের জন্য। কিন্তু নিরন্ন অসহায়কে অনেক সময় আমরা সাহায্য-সহযোগিতা করি না। মন্দিরের পুরোহিত বা মসজিদের মোল্লা সাহেবরাও অনেক সময় হৃদয়হীন কাজে লিপ্ত থাকে। মানবধর্মের বিষয়টি নজরুল তার ‘মানুষ’ কবিতায় জোরালোভাবে তুলে ধরেন—‘মানুষের চেয়ে বড়ো কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান ।’