বিশ্বে বাঙালিই একমাত্র জাতি, যারা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য রাজপথে আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন আজও নিশ্চিত হয়নি। বিশেষ করে বাংলাদেশে সরকারি কাজে মাতৃভাষা ব্যবহারের দাবি বিভিন্ন পর্যায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু সমস্যাও রয়েছে। যেমন- যথাযথ পরিভাষার অভাব ও বানানরীতির ভিন্নতা এবং আঞ্চলিকতার কারণে ব্যাবহারিক ভাষায় অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রমিত ভাষারীতি সম্পর্কে কর্মকর্তাগণ অবহিত না থাকা এবং ক্ষেত্রবিশেষে সময়স্বল্পতা ও তাড়াহুড়ার কারণে ভাষার শুদ্ধতা সকল ক্ষেত্রে করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। বিষয়টি মন্ত্রিসভা বৈঠকেও আলোচিত হয়। তৎপ্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির প্রমিত বানানরীতি অনুসরণের অনুশাসন প্রদান করেন। সে অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৩১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে 'সরকারি কাজে বাংলা একাডেমির প্রমিত বাংলা বানান রীতি অনুসরণ' সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, 'ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বানানের শুদ্ধতা সম্পর্কে যত্নবান হওয়া যেমন আবশ্যক, তেমনি সরকারি কাজে ভাষারীতির সমরূপতা রক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা একাডেমির প্রমিত বাংলা বানানরীতি ইতোমধ্যে পাঠ্যপুস্তকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনুসৃত হচ্ছে। বাংলা একাডেমির প্রমিত বাংলা বানানরীতি অনুসরণের মাধ্যমে সরকারি কাজে বাংলা ভাষার সামঞ্জস্য বিধান সম্ভব।'