আসসালামু আলাইকুম। বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণ জয়ন্তীতে স্মরণিকা বের হবে এবং সেখানে আমার বহু বছরের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু লেখার জন্য অফিস থেকে বলা হয়েছিল। আমি অনেক পরিশ্রম করে এই লেখাটি লিখেছিলাম। কিন্তু সময়ের কারণে স্মরণিকাটি তখন প্রকাশিত হয়নি। যা হোক, প্রায় সাতটি বছর লেখাটি খামবন্দি করে আলমারিতে তুলে রেখেছিলাম। গত অক্টোবরে মনে হলো তথ্যবহুল এই লেখাটি সাতটি বছর ধারণ করে রেখেছি হৃদয়ে। শ্রদ্ধা, স্নেহ, মায়া, মমতা ও ভালোবাসায় যারা সৃষ্টি করেন তাদের কাছে সেই সৃষ্টি হয় সন্তানতুল্য। অতএব সিদ্ধান্ত নিলাম আমিই লেখাটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করব। উল্লেখ্য, যখন লেখাটি লিখেছিলাম তখন আমি এতটা অসুস্থ ছিলাম না, বয়সও কিছুটা কম ছিল। বর্তমানে সিয়াম ও আমি জীবনের সিঁড়ি টপকাতে টপকাতে ৩৬ ও ৬১ বছরে। গত তিন বছর যাবৎ আমি বেশ অসুস্থ। আমার সিয়াম বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তান। পূর্ণবয়স্ক শরীরে অরণ্যে শিশু মনের গভীরে। আমরা দুজনই লড়াকু। তবে আমি মনে করি আমার সিয়ামের লড়াইটাই বেশি। কারণ আমি তো জন্ম থেকেই অসুস্থ ছিলাম না। আর আমার কলিজার টুকরা কী নিদারুণ কষ্টে, যন্ত্রণায় দগ্ধে জন্ম থেকেই ডাক্তার, ওষুধ, ইনজেকশনসহ আরো কত না ব্যথায় জর্জরিত। যা হোক, আপনারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সুধী পাঠক, সাত বছরের ব্যবধানে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। যেমন―অনেক সহকর্মী আজ আমাদের মাঝে নেই। চলে গেছেন না-ফেরার দেশে। অনেক নতুন উপস্থাপক এসেছেন। যারা মাঝে ছিলেন না তারাও এসেছেন। কেউ কেউ আবার আরো সুন্দর জীবনের প্রত্যাশায় দেশের বাইরে চলে গেছেন। আসলে জীবন তো এ রকমই। শুধু যাওয়া-আসার মাঝখানে যেই সাঁকোটি তৈরি হয়েছে সেই সাঁকোটি পার হতে আমার পরিশ্রমটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। আমি তো খুব একটা সুস্থ নই। সিয়ামও বড় হয়ে গেছে। মাশাআল্লাহ। এই লেখাটির জন্য আগে-পরে অনেক তথ্য জোগাড় করতে হয়েছে। আমি যাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি তাদের সবার জন্য অনেক শ্রদ্ধা ও শুভ কামনা। বিজ্ঞাপন তরঙ্গের অগণিত শ্রোতাবন্ধু, শুভানুধ্যায়ী ও শ্রদ্ধেয় বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এ ছাড়াও আমার বর্তমান জীবনের প্রেক্ষাপটে আমার সহকর্মী উপস্থাপক বন্ধুরা, বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী, ডিউটি অফিসার থেকে শুরু করে ডিউটি রুম পর্যন্ত যাদের নিত্য পথচলা, কথা বলা, তাদের সবার কাছে আমি ঋণী। খুব কাছ থেকে সবাইকে চিনি। কল্যাণ হোক সবার। সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহপাকের।
আফরােজা নিজামী। ৯ ডিসেম্বর ১৯৬৩ সালে ঢাকা আজিমপুরে জন্ম। পৈত্রিক নিবাস- আহমেদ হাউজ, মৌলভি বাড়ি, পুরাতন মৌলভি পাড়া, কুমিল্লা। পিতা- মরহুম নিজাম উদ্দিন আহমেদ, মাতা- মরহুমা নাজলীন আহমেদ, স্বামী- মরহুম প্রফেসর এমএ মান্নান। ‘সােসাইটি ফর দি ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেন [সােয়াক] এর প্রথম ছয়জন ছাত্রের একজন- গােলাম মঈন উদ্দিন সিয়াম তার একমাত্র সন্তান। বয়স ২৬ বছর। বর্তমানে একমাত্র সন্তান সিয়ামকে নিয়ে মগবাজার, দিলুরােডে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। আফরােজা নিজামী ১৯৮৩ সালে ইডেন কলেজ থেকে স্নাতক। পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশ বেতারে গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে স্বনামখ্যাত উপস্থাপক, বিজ্ঞাপনকণ্ঠ ও নাট্যশিল্পী হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রায় একদশক অডিও বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত গীতিকার। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- উৎসব আমার বারান্দায়- একুশে বইমেলা ২০০৫, জল শব্দের কবিতা- একুশে বইমেলা ২০০৬, হলুদ বনে কথার পাখি- একুশে বইমেলা ২০০৭, ছােটগল্পে আমরাএকুশে বইমেলা ২০১০, বিবর্ণ বসন্ত- একুশে বইমেলা ২০১১, বসন্ত রাত্রি- একুশে বইমেলা ২০১২, তােমাকে অভিনন্দন- একুশে বইমেলা ২০১২। অডিও অ্যালবাম- সােপর্দ- ২০০৬, জোসনার নীলে কথার পাখি- ২০০৮, রঙধনু উঠোনে-২০১২। এছাড়াও আজীবন সদস্য সম্মাননা- ‘সােসাইটি ফর দি ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেন (সােয়াক২০১৩।