প্রারম্ভিক অসীম মেহেরবান, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। প্রাচীন কালে বাঙালির ঘরে ঘরে পুঁথিসাহিত্য চর্চার পাশাপাশি শুরু হয় বাংলা ভাষায় পবিত্র কুরআনের কাব্যানুবাদ। এই শুরুটা হয়েছিল কুরআন অবতীর্ণ হবার প্রায় আটশ’ বছর পরে। অর্থাৎ, এই কাব্যানুবাদ বাংলা সাহিত্যের সমবয়সী। এই অনুবাদসাহিত্য এখনো যথাযথঃ মূল্যায়ণের অপেক্ষায় রয়েছে। এক দিকে বৃটিশের মুসলিম বিরোধী তৎপরতা, অপরদিকে তোষামুদে হিন্দু সমাজের উচ্চাভিলাষ, বাংলা সাহিত্যের এই শাখাটির বিকশিত হবার সুযোগকে বার বার প্রতিহত করেছে। তারপরও ধর্মপ্রাণ মুসলমান নিজ মনের তাগিদেই কুরআন অনুবাদে মনযোগী হয়েছেন। এই সব অনুবাদের অধিকাংশই অপ্রকাশিত রয়ে গেলেও, লেখকদের নিজস্ব প্রচেষ্টায় প্রকাশিত এসংক্রান্ত প্রচুর পুস্তক রয়েছে। এসব পুস্তকের বেশিরভাগই ভাষাগত দুর্বলতাসহ বিভিন্ন ত্রুটির কারণে পাঠক সমাজে সমাদৃত হয় নাই। তব্ওু সুখপাঠ্য অনুবাদের সংখ্যাও কম নয়। এমনকি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি গোলাম মোস্তফা, কায়কোবাদ, তালিম হোসেন, প্রমুখ স্বনামধন্য কবিরাও সাধ্যানুযায়ী কুরআনের কাব্যানুবাদ রচনা করে গেছেন। অনুবাদ কখনোই মূল গ্রন্থের পূর্ণাঙ্গ রূপ নয়। তাহলেও ভিন্ন ভাষার গ্রন্থ অনুধাবনের জন্য অনুবাদের প্রয়োজনিয়তা অনস্বীকার্য। যত বেশী অনুবাদ হবে, ততই মূল গ্রন্থের ভাব ও রসের গভীর মর্মে প্রবেশ করা সম্ভব হবে। “পবিত্র কুরআনের ত্রিশতম পারার ছন্দময় বাংলা অনুবাদ” প্রকাশ পায় ২০২১ সালে। গ্রন্থটি পাঠকদের প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হওয়ায় ঊনত্রিশতম পারা প্রকাশ করা সম্ভব হয় ২০২৩ সালে। ধারবাহিকতা বজায় রেখে, মহান আল্লাহর অনুগ্রহে আটাশতম ও সাতাশতম পারা অনুবাদের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। নানান প্রতিকূলতার মাঝেও গ্রন্থ দু’টির মুদ্রণ সমাপ্ত হলো। আন্তরিক কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি যে, গোপনে সহায়তা দিয়ে এ মহান কাজে অংশিদার হয়েছেন কবি ডা. সৈয়দা কাউসারী মালিক। বইটির সর্বাঙ্গীন সৌন্দর্য্য এবং সর্বস্তরের পাঠকের আন্তরিক প্রশান্তি কামনা করি। সালামান্তে,- ড.ইসমাত মির্যা অবসর প্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক, পেট্রোবাংলা