আরজ আলী মাতুব্বর বরিশাল জেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচরি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ১৯০০ সালের ১৯ ডিসেম্বর। পারিবারিকভাবে আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া না করতে পারলেও তিনি নিজেকে গড়ে তোলেন বিজ্ঞানমনস্ক, স্বশিক্ষিত মুক্তচিন্তার মানুষ হিসেবে। অসীম পাণ্ডিত্যের অধিকারী হয়েও কৃষিকাজ করে জীবনধারণ করতেন তিনি।
আরজ আলী মাতুব্বরের ছিল অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার ক্ষমতা। ৮৬ বছর বয়সে ১৯৮৬ সালের ১৫ মার্চ দেহাবসানের পরও তাঁর জীবনজিজ্ঞাসা আমাদের জ্ঞানালোককে উন্মোচন করতে অনুপ্রাণিত করে। ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাস ও সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকার জন্য আরজ আলী মাতুব্বর বারবার আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন প্রতিক্রিয়াশীল চক্র দ্বারা।
আরজ আলী মাতুব্বর ৩০ বছরেরও অধিক সময়কালে ১১টি পাণ্ডুলিপি রচনা করেছেন। এর মধ্যে জীবদ্দশায় ৩টি বই এবং ১টি সংকলন-- সত্যের সন্ধান, অনুমান, সৃষ্টি রহস্য ও স্মরণিকা। তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরে ১টি পাণ্ডুলিপি প্রকাশিত হয়।
গ্রন্থাকারে প্রকাশিত এ বইগুলো ছাড়াও তাঁর মৃত্যুর পর ৬টি অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি প্রকাশিত হয়েছে তিন খণ্ডে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-- সীজের ফুল (কবিতা), জীবন বাণী (আত্মজীবনী), ভিখারীর আত্মকাহিনী (আত্মজীবনী), কৃষকের ভাগ্যগ্রহ (প্রবন্ধ) এবং বেদের অবদান (প্রবন্ধ)।
বইটিতে লিখেছেন কাজী আবুল কাসেম, মুসা আনসারী, শামসুর রাহমান, বদরুদ্দীন উমর, কায়সুল হক, কামাল লোহানী, যতীন সরকার, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মোজাফফর হোসেন, হাসান আজিজুল হক, হাসনাত আবদুল হাই, মুহাম্মদ শামসুল হক, আমজাদ হোসেন, আমিনুল ইসলাম, খালেকুজ্জামান, সেলিনা হোসেন, কাজী নূরুল ইসলাম, সেলিম আল দীন, আবু সাঈদ খান, আবুল বারকাত, আনু মুহাম্মদ, ড. মুকিদ চৌধুরী, মানস চৌধুরী, আবু সাঈদ তুলু ও আবদুল্লাহ আল মোহন।