দুর্দান্ত এক কাব্যজগতের কারিগর নুর মোহাম্মদ! দীর্ঘদিন ধরে তাঁর কাব্যচর্চা পাঠককে প্রাণিত করে আসছে। এবারই প্রথম মলাটবদ্ধ হলো। কবিতায় তাঁর উচ্চারণ স্পষ্ট, তীক্ষ্ণ ও অন্তর্ভেদী। শব্দচয়ন ও বাক্যশৈলি বিশেষ যত্নপ্রসূত--যা কবিতাকে শিল্পমানোত্তীর্ণ করে তোলে। সমকালীন সমাজ বাস্তবতার গভীর চিন্তাপীঠে নুর মোহাম্মদের কবিতায় এক আধুনিক মন ও মানুষের বোধ ফুটে উঠে, যা তাঁর অনুসন্ধিৎসু দর্শন চেতনার অংশ। একই সঙ্গে শেকড়সংলগ্নতা তাঁর কবিতাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। কবিতায় কবি সত্য অন্বেষণের পাশাপাশি কখনো বাস্তবের সীমা অতিক্রম করে মগ্ন চৈতন্যে পরাবাস্তবকেও খুঁজছেন। কবি নুর মোহাম্মদ কবিতায় মিথাশ্রয়ী। আরবীয় ও পশ্চিমা মিথকে তিনি জীবন্ত করে তোলেন তাঁর মসিস্পর্শে। শব্দশিল্পের মুন্সিয়ানা এবং অর্থদ্যোতনার গভীরতায় তাঁর কবিতা তাঁরই মতো দৃঢ়, হার্দ--যা অন্তরলোক ও বহির্লোকের দ্বান্দ্বিকতায় বাণীঋদ্ধ। নুর মোহাম্মদের কবিতায় বুদ্ধিবৃত্তিক ভাব প্রকাশের পাশাপাশি হৃদয়বৃত্তিক আত্ম উন্মোচন দেখা যায়। সহজ-সরল ও সাধারণ গীতল শব্দবন্ধে সুচিন্তিত চিত্রকল্পের সাহায্যে অতি সাধারণ বিষয়কেও তিনি কবিতা করে তোলেন। ছন্দ, অলংকার, রূপক, চিত্রকল্প, উৎপ্রেক্ষা, উপমার ভেতর দিয়ে ‘জুতা আমাকে নিয়ে হাঁটছে’ গ্রন্থে একটি চিরকালীন সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন কবি। নুর মোহাম্মদের কাব্যযাত্রা মহাকালীন ব্যাপ্তি লাভ করুক। --আলী প্রয়াস