আমিরুল মুমিনীন হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযিয রহ.। যিনি ‘বাইআত’ গ্রহণের জন্য সমবেত জনতার মাঝে প্রদত্ত প্রথম ভাষণেই নিজের জীবন-ইতিহাস ও রাজনৈতিক জীবনালেখ্য জ্যোতির্ময় বর্ণমালায় লিপিবদ্ধ করতে সক্ষম হন। অত্যন্ত বিনয় ও ন¤্রতার সাথে মিম্বারে আরোহণ করে অতিশয় কোমলদৃষ্টিতে জনতার দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, “হে লোকসকল! আপনাদের নবীর পর আর কোনো নবী নেই। তাঁর প্রতি অবতীর্ণ কিতাবের পর আর কোনো কিতাব নেই। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা যা হালাল সাব্যস্ত করেন কেয়ামত পর্যন্ত তা হালাল থাকবে। জেনে রাখুন, আমি আপনাদের বিচারক নই; বরং আমি হলাম আপনাদের মাঝে আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়নকারী মাত্র। জেনে রাখুন, আমি নতুন কোনো রীতিনীতি ও বিধি-বিধান চালুকারী নই; বরং আমি পূর্ববর্তী বিধি-বিধানের অনুসরণকারী মাত্র। জেনে রাখুন, আল্লাহর নাফরমানি করে কারো আনুগত্য করা জায়েয নেই। আরো জেনে রাখুন, আমি আপনাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ নই; বরং আপনাদের মতই সাধারণ একজন মানুষ। তবে পার্থক্য হচ্ছে, আল্লাহ আমার ঘাড়ে আপনাদের সবার চেয়ে ভারি বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন।” হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রহ.কে অসুস্থাবস্থায় দেখে মুসলিমা ইবনে ইবনে আব্দুল মালেক দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে যখন বলেছিলেন, “আমিরুল মুমিনীন! আপনি তো অঢেল ধন-সম্পদ থাকা সত্তে¡ও সন্তান-সন্ততিকে নিঃস্ব করে রেখে গেলেন...। শোনামাত্রই তিনি দৃপ্তকণ্ঠে বলেন, “শোনো! তাদের জন্য আমার পক্ষ থেকে অভিভাবক ও ওসিয়তকারী হচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা, যিনি মহাগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। আর তিনিই সৎলোকদের অভিভাবক।”