হযরত বেলাল রাযি.। রাসুলুল্লাহ সা. এর নবুওত প্রাপ্তির পর প্রথম ইসলাম প্রকাশকারী সাতজন সাহাবীর মধ্য হতে অন্যতম একজন সাহাবী। ইসলাম গ্রহণের ফলে জালেমরা তাকে প্রচন্ড রোদে, উত্তপ্ত গরম পাথরের উপর উপুর করে শুইয়ে দিয়ে আরেকটি ভারী পাথর পিঠের উপর রেখে দিত। কখনো আবার তাকে প্রচন্ড রোদে উত্তপ্ত বালি অথবা পাথরের উপর শুইয়ে ভারী পাথর তার বুকের উপর রেখে দিতো। আবার যখন সূর্যের প্রখরতা কমে যেতো, তখন গলায় রশি বেঁধে কিশোরদের নিকট সোপর্দ করতো; যাতে তারা মক্কার এক প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যায়! তবু জালেমরা তার মুখ থেকে প্রতিমাদের নাম বের করতে পারেনি। বের হয়েছিল শুধু একটি ইশব্দ; আহাদ, আহাদ। বলতেন শুধু, আমার রবএকজনই, তিনি হলেন ‘আল্লাহ’! হযরত বেলাল রাযি. হয়তো গোলাম ছিলেন, ছিলেন কালো কুচকুচে মানুষ। হয়তোবা দেখতেও অতটা সুন্দর ছিলেন না। কিন্তু ধর্মপ্রিয় হবার কারণে আল্লাহর কাছে তিনি এত প্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন যে, জান্নাতে রাসুল সা. এর সামনে থেকে তার পদশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল! এমনিতেই তো আর প্রিয়নবী বলেননি যে, “বেলাল কে রাগালে আল্লাহও রেগে যান!” প্রিয়নবীরও বড্ড প্রিয়একজন মানুষ ছিলেন তিনি। ভালোবেসে তাকে সম্বোধন করে আমার মুয়াজ্জিন ও সাইয়্যিদুল মুয়াজ্জিনও বলেছেন। মুসলমান হবার পর থেকে প্রিয়নবীর কামরা থেকে কবর পর্যন্ত সর্বদা পাশাপাশি থেকেছেন। চলার পথে চাদর ধরে ছায়া দিয়েছেন। ফলে তিনি ছিলেন রাসুল সা. এর খুব প্রিয় একজন খাদেম। তাইতো প্রিয়নবী সা. এর ইন্তেকালের পর আয়েশা রাযি. এর হুজরার সামনে বসে বসে নীরবে শুধু কাঁদতেন। কারণ নবীজী সা. এর বিচ্ছেদ-বেদনা তাকে এতোটা আঘাত করেছিল যে, তিনি নিজ পায়ের উপর দাঁড়াতেও সক্ষম ছিলেন না। নীরব হয়ে বসে এমনভাবে জড়সড় হয়ে বসে থাকতেন; যেন নিষ্প্রাণ নিথর একটি দেহ...!