হযরত আবু হুরায়রা রাযি.। যিনি ছিলেন প্রিয়নবী সা. এর একজন প্রিয় সাহাবী ও একান্ত সেবক। যার প্রকৃত নাম আবদুর রহমান ইবনে সখর বা উমায়র ইবনে আমির। তৎকালীন ইলমের মারকায ‘আসহাবুস সুফফা’র একজন অন্যতম সদস্য এবং জ্ঞানপিপাসু একজন সাহাবী ছিলেন তিনি। ছোটবেলায় বিড়াল শাবকের সাথে তার খেলাধূলা দেখে তার বন্ধুরা নাম দেন আবু হুরাইরা (বিড়ালওয়ালা)। পরবর্তীতে এ নামেই তিনি সকলের মাঝে পরিচিত হন। জ্ঞান অর্জনের প্রতি সীমাতিরিক্ত মনোযোগ এবং সবসময় প্রিয়নবীর মজলিসে উপস্থিত থাকার ব্যাপারে অত্যধিক গুরুত্ব প্রদানের কারণে জীবনে তিনি এত ক্ষুধা ও দারিদ্রতা সহ্য করেছেন যে, তার সমকালীনদের মধ্যে কেউ তা করেননি। ফলে তিনি ব্যক্তিজীবনে ছিলেন অত্যন্ত দরিদ্র্য। মসজিদে নববীতে নামাজ পড়ার পর তিনি সবার সাথে শুধু এ আশায় কথা বলতেন যে, কেউ হয়তো তার ক্ষুধার্থ অবস্থা বুঝে তাকে খাওয়ার জন্য ডাকবে, তাকে ডেকে নিয়ে কিছু খেতে দিবে। মাঝে মাঝে তার ক্ষুধার তীব্রতা এত বেড়ে যেত যে, ক্ষুধার যন্ত্রণায় রাস্তায় শুয়ে ছটফট করতেন। কিন্তু মানুষ ভাবতো পাগল বা মৃগিরোগী! বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু প্রয়োজন, শুধু ততটুকু দিনমজুরের কাজ করে আহারের ব্যবস্থা করতেন। যেমন জঙ্গল হতে জ্বালানি সংগ্রহ বা মনিবের উটের রশি টেনে চলা ইত্যাদি। এত কষ্ট ও পড়াশোনা করে তিনি অর্জন করেছিলেন প্রিয়নবীর গভীর ভালোবাসা। প্রিয়নবী ভালোবেসে শুধু তাকেই ক’টা খেজুর দিয়েছিলেন বরকতের দোয়া করে। পরবর্তীতে ছোট্ট সে খেজুরথলে থেকে পাঁচ মন শুধু দান-ই করেছিলেন। রাসুলের সংশ্রব তাকে সম্মানিত করেছে সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী উপাধি দিয়ে। যার সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৩৭০টিরও বেশি! সেই নির্ভুল হাদীসগুলোর গ্রহণযোগ্যতাও ছিল সবার কাছে। তাঁর প্রাপ্য এখানেই শেষ নয়। তার প্রাপ্তির ঝুড়িতে আরো আছে প্রিয় মায়ের ইসলাম গ্রহণের সুখকর স্মৃতিজড়িত খুশির কান্না...।