সূচিপত্র * পরিত্রাণ পুস্তকের অবশিষ্টাংশ বিষয় * তাওবাহ স্থায়ী হওয়ার দিক থেকে মানুষের শ্রেণীভেদ * স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছাকৃত পাপ কার্যের প্রতিকার * তাওবাহ করতে অনিচ্ছার দাওয়াই ও তার চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বিতীয় অধ্যায় : ছবর (ধৈর্য) এবং শোকর (কৃতজ্ঞতা) ছবর (ধৈর্য) * ধৈর্যের কল্যাণ * ধৈর্যের প্রকৃত পরিচয় ও অর্থ * ক্ষুদ্র কিয়ামতের প্রকৃত অবস্থা * বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধৈর্যের বিভিন্ন নাম * শক্তি ও দুর্বলতা ভেদে ধৈর্যের শ্রেণীভেদ * বিধানের পরিপ্রেক্ষিতে ধৈর্যের পার্থক্য * ধৈর্যের শক্তি বৃদ্ধির দাওয়াই * পার্থিব রাজত্ব এবং পারলৌকিক রাজত্বের মর্ম * যশে মত্ত ব্যক্তির জন্য তিনটি উপায়
শোকর (কৃতজ্ঞতা) শোকরের অর্থাৎ কৃতজ্ঞতা স্বীকারের কল্যাণ * কৃতজ্ঞতার সীমা ও পরিচয় * আল্লাহর প্রতি কর্তব্য পালনে শোকরের পদ্ধতি * আল্লাহর প্রিয় অপ্রিয় কার্যসমূহ * আল্লাহর বান্দাগণও সৃষ্টিবৈচিত্র্যের দিকে থেকে দু’ভাগে বিভক্ত * শোকর বা কৃতজ্ঞতার নিয়মাবলি * নিয়ামতের পরিচয় ও শ্রেণীবিভাগ * হেদায়েতের দ্বিতীয় স্তর বিশিষ্ট লোকের পরিশ্রমলব্ধ পথ প্রাপ্তি * আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত * বুঝের কারণ সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহর নিয়ামত * লোভ ও ইচ্ছা সৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন প্রকার নিয়ামত * খাদ্য সংগ্রহের মূল সম্পদ * খাদ্য পৌঁছার উপকরণের সম্পদ * খাদ্যশস্য বিশুদ্ধিকরণ * ফিরেশতা সৃষ্টির নিয়ামত * মানুষের অকৃতজ্ঞ হওয়ার কারণ * ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার সমন্বয় * বিপদের কল্যাণ * ছবর ও শোকরের মধ্যে উত্তম কোনটি
তৃতীয় অধ্যায় : * ভয়-ভীতি এবং আশা-আকাঙ্খা * আশার পরিচয় * আশার পরিচয় * আশার কল্যাণ * নৈরাশ্যের দাওয়াই এবং আশা অর্জনের উপায় * আশা বৃদ্ধির উপায় কুরআন হাদীয় অধ্যায়ন * ভয়ের প্রকৃত পরিচয় * ভয়ের স্তর ও প্রকারভেদ * বিষয় ভেদে ভয়ের শ্রেণীভেদ * ভয় ও আশায় তুলনা ভেদে কল্যাণ * ভয় অর্জনের দাওয়াই * অন্তিম সময়ের মন্দের কারণ * অন্তিম অবস্থা মন্দ হওয়ার অর্থ * ফিরেশতা ও নবীদের ভয়ের উপাখ্যানাবলি * সাহাবায়ে কিরাম এবং অন্যান্য বুযর্গগণের ভয়
চতুর্থ অধ্যায় : * দরিদ্রতা ও বৈরাগ্য * দরিদ্রতার পরিচয় * দরিদ্রতার কল্যাণ * তুষ্ট,পরিতৃপ্ত ও সত্যবাদী দরিদ্রের গৌরব * ধনের তুলনায় দরিদ্রতার শ্রেষ্ঠত্ব * লোভী দরিদ্র ও লোভী ধনী * দরিদ্রতার মধ্যে দরিদ্রের কর্তব্য * অযাচিত দান গ্রহণের নিয়ম * ভিক্ষা কখন হারাম * ভিক্ষা কোন স্থানে হালাল * কি পরিমাণ দ্রব্য থাকলে ভিক্ষা হালাল হয় * ভিক্ষুকদের অবস্থা * বৈরাগ্য ও বৈরাগ্যের পরিচয় * বৈরাগ্যের কল্যাণ * বৈরাগ্যের শ্রেণীভেদ * পরিত্যাজ্য বস্তুর প্রকারভেদে বৈরাগ্যের শ্রেণীবিভাগ * জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশকীয় বস্তু সম্বন্ধে বৈরাগ্য * জীবন ধারণপযোগী ছ’প্রকার দ্রব্য * অন্য আবশ্যকীয় দ্রব্য বস্ত্র * নবী ও সাহাবীগণের আদর্শ * একটি অত্যাবশ্যকীয় বস্তু বাসস্থান * অন্যতম অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য গৃহের আসবাবপত্র * অন্যতম অত্যাবশ্যকীয় বিষয় বিবাহ * অন্যতম অত্যাবশ্যকীয় বস্তু ধন ও মান * বৈরাগ্যের চিহ্ন
পঞ্চ অধ্যায় : * তাওহীদ ( একত্ববাদ) এবং তাওয়াক্কুল (আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা) * আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার কল্যাণ * তাওহীদের প্রকৃত পরিচয় * তাওয়াক্কুলের অবস্থা * আল্লাহ-নির্ভরশীল মানুসের তিনটি শ্রেণী * আওয়াক্কুল সম্পর্কে সূফীদের উক্তিসমূহ * আল্লাহ -নির্ভরশীল লোকদের কাজ * তাওয়াক্কুল ব্যবহারে আনবার প্রণালী * পরিবারবিশিষ্ট লোকের তাওয়াক্কুল * কারণ সম্পর্কে তাওয়াক্কুলকারীদের অবস্থা * তাওয়াক্কুল ব্যবহারে আনবার তৃতীয় প্রণালী * ধন সম্পর্কে নির্ভরশীল লোকের পালনীয় নিয়মাবলী * তাওয়াক্কুল ব্যবহারে আনবার চতুর্থ প্রণালী * অবস্থা বিশেষে দাওয়াই ত্যাগ করা সুন্নত বিরোধী নয় * মহামারির স্থানে যাওয়া অনুচিত * রোগ প্রকাশ বা গোপন করার বিষয়ে আল্লাহ-নির্ভরশীলের অবস্থা * অনুরাগ, প্রেম-প্রীতি ও প্রসন্নতা * আল্লাহর প্রেমের ব্যাপারে শরীয়তের প্রমাণ * প্রেমের পরিচয় এবং কারণ * ভালবাসার কারণ প্রেমিক ও প্রেমাস্পদের মধ্যে গুপ্ত সম্পর্ক * একমাত্র আল্লাহতায়া্লাই ভালবাসার যোগ্য
বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ., সংক্ষেপে ইমাম গাজ্জালী ছিলেন একজন সুফিসাধক ও মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাবিদ, যিনি তাঁর দর্শন ও চিন্তাধারা বিশ্ব মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর পারিবারিক ব্যবসা সুতা সংক্রান্ত হওয়ায়, সেখান থেকে তার নাম গাজ্জালী হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যেহেতু 'গাজ্জাল' শব্দের অর্থ সুতা। ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দে (হিজরি ৪৫০ সাল) ইমাম গাজ্জালী ইরানের খোরাসান প্রদেশের অন্তর্গত তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং এই তুস নগরীতেই তার শৈশবকাল ও শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি ইসলামের স্বর্ণযুগে জন্ম নেন, যে যুগে শিক্ষা, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে মুসলমানরা অনেক এগিয়ে গিয়েছিলো। একইসাথে বিস্তার লাভ করেছিলো পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনেরও। ইমাম গাজ্জালী এসকল বিষয়েই দীক্ষা লাভ করেন এবং বিশেষ করে ঐ যুগের বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ আলেম ইমামুল হারামাইন আল জুয়াইনির কাছ থেকে ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। মুসলিম দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, ফিকহশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী । জ্ঞান-বিজ্ঞানের তীর্থস্থান বাগদাদের সেরা বিদ্যাপীঠ নিযামিয়া মাদ্রাসায় তিনি অধ্যাপনা করেন। তিনি তৎকালীন বাদশাহর দরবারেও আসন লাভ করেন। তবে সুফিবাদ ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়ে তীব্র আকর্ষণ থাকায় তিনি জ্ঞান আহরণের জন্য দেশ-বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন ও নানা বিষয় সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান অর্জন করেন। ইমাম গাজ্জালী রহ. বই রচনার মাধ্যমে তাঁর অর্জিত এসকল জ্ঞান মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমূহ-তে তিনি আলোচনা করেছেন সুফিবাদ, ইসলামি দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে, এবং তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা চার শতাধিক। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'আসমাউল হুসনা', 'মিশকাতুল আনোয়ার', 'ফাতাওয়া', 'মিআর আল ইলম', 'হাকিকাতুর রুহু', 'দাকায়েকুল আখবার' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১১১১ খ্রিস্টাব্দে (৫০৫ হিজরি) তিনি নিজ জন্মভূমি তুস নগরীতে মৃত্যবরণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় একজন মনীষী।