আমাদের জীবনে সাফল্য অর্জনের সবচাইতে বড় বাধা হল ‘অজুহাত’। যে হাত মানুষকে ব্যর্থ করে দেয়। সামনে এগিয়ে চলার সমস্ত পথ বন্ধ করে দেয়। আপনি সফল মানুষদের দিকে তাকালে বুঝবেন। তাঁরা কখনও ‘অজুহাত’-কে প্রশ্রয় দেননি। প্রতিটি মানুষের ব্যর্থতার পেছনে সবচে বড় হাত হল ‘অজুহাত’। আমাদের ডানহাত ও বামহাতের পরে যে হাত ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দেয় তা হল ‘অজুহাত’। একটা মানুষের অন্যতম একটি ব্যধি বা রোগ। এই রোগ সারিয়ে তুলতে না পারলে আপনাকে জীবনে চরম মূল্য দিতে হবে। অন্যান্য রোগের মতোই ‘অজুহাত’ নামক রোগের যথাযথ চিকিৎসা করতে না পারলে এটা এক সময় বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এই রোগগ্রস্ত মানুষের চিন্তা—ভাবনা অনেকটাই নেগেটিভ বা নেতিবাচক হয়ে থাকে। সবককিছুতেই এদের একটা গা ছাড়া ভাব থাকে। এরা বলে, আমার স্বাস্থ্য খারাপ, মন ভাল নেই, আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। বাবার তেমন সম্পত্তি নেই, আমি নিতান্তই দীনহীন, অসহায়, আমার কিছু করার ছিল না। তারপর শিক্ষার অভাব? বয়স বেশী? খুব কম বয়স? দুর্ভাগ্যা? ব্যক্তিগত দুর্ভোগ? বউ ভালো না? পরিবারের দোষ? এভাবে অজুহাতের ব্যধিতে আক্রান্ত ব্যর্থ মানুষটি ‘ভালো’ একটি অজুহাত খুঁজে বের করে সেটাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।এরপর নিজের অ-সামর্থের কারণ বোঝাতে গিয়ে নিজেকে ও অন্যদের ঐ অজুহাত শোনায়। অপর দিকে সফল মানুষের জীবন অধ্যয়ন করলে দেখবেন। তারা কিন্তু অতি সাধারণ ব্যক্তির মতো নানা অজুহাত দেখাতে পারবেন, কিন্তু তা করেননি। রুসভেল্ট তার অচল পা দু’টির অজুহাত দিতে পারতেন; ট্রুম্যান “কলেজ শিক্ষকার অভাব” কে ব্যর্থতার কারণ বলে অভিহিত করতে পারতেন; কেনেডি বলতে পারতেন, “এত অল্প বয়সে কি করে প্রেসিডেন্ট হব” জনসন ও আইস্যানহাওয়ার হৃদরোগের অজুহাত দেখাতে পারতেন। কিন্তু তারা ‘অজুহাত’ অগ্রাজ্য করেই জীবনে সফলতার শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন।
সৈয়দ মোস্তাক আহ্মাদের জন্ম ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে। তার পিতা মাওলানা মুহাম্মদ তমিজ উদ্দীন (র.) ছিলেন একজন পীর ও আধ্যাত্মিক পুরুষ। তার মাতা মনোয়ারা বেগমও ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আগত। এরকম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মোস্তাক আহ্মাদ এর ভাগ্য যেন নির্ধারিতই ছিল যে তিনি বড় হয়ে ধর্ম ও সুফি দর্শন নিয়ে লিখবেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের কল্যাণে শৈশব থেকে তার ধর্মীয় শিক্ষার ভিত মজবুত হয়। পাশাপাশি সুফি দর্শন, মরমী দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি বিষয়েও পারিবারিকভাবে শিক্ষা লাভ করেন। তাই তো মোস্তাক আহ্মাদ এর বই সমূহ আধ্যাত্মিকতা ও দর্শন থেকে শুরু করে ধর্মীয় ইতিহাস, অনুশাসন, আত্মোন্নয়ন, মানবজীবন ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎস। মোস্তাক আহমাদ একজন দক্ষ মোটিভেটর। মেডিটেশন ও নানাবিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বর্তমানে ‘ড্রিমওয়ে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ এর ড্রিমওয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মানবোন্নয়ন, ব্যক্তিক উৎকর্ষ সাধন, সুফি ও মরমী দর্শন নিয়ে দেড় শতাধিক পাঠকপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। মোস্তাক আহমাদ এর বই সমগ্র ব্যক্তিজীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায় আরোহণের প্রেরণা দেয়, ব্যক্তিমনের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায়, সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষুধা জাগ্রত করে। ‘দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ’, ‘বুদ্ধি ও বিনিয়োগ শেয়ার ব্যবসায় সেরা সাফল্য’, ‘মেধা বিকাশের সহজ উপায়’, ‘ইতিবাচক চিন্তার শক্তি’, ‘বিজনেস স্কুল’, ‘মাওলানা রুমীর আত্মদর্শন’, ‘লালন সমগ্র’, ‘টাকা ধরার কৌশল’, ‘দিওয়ান-ই-হাফিজ’, ‘দিওয়ান-ই-শামস তাবরিজ’, ‘আত্মোন্নয়ন ও মেডিটেশন’ ইত্যাদি তার কিছু জনপ্রিয় বই।