"প্রকাশিত-অপ্রকাশিত কবিতাসমগ্র" বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ জীবনানন্দের জীবদ্দশায় তার সাতটি মাত্র কবিতাগ্রন্থ। প্রকাশিত হয়েছিল এবং এই সাতটি কবিতাগ্রন্থে কবি-রচিত মাত্র ১৬২টি কবিতা সগ্রথিত হয়েছিল। এখন, জীবনানন্দের মৃত্যুর চল্লিশ বছর পরে জীবনানন্দের এই সমগ্র কবিতা প্রযােজিত হচ্ছে। এই বিশাল সগ্রহ গ্রন্থে জীবনানন্দের জীবদ্দশায় প্রকাশিত সাতটি গ্রন্থ “ঝরা পালক”, “ধূসর পাণ্ডুলিপি”, “বনলতা সেন” (কবিতাভবন-সংস্করণ), “মহাপৃথিবী”, “সাতটি তারার তিমির”, “বনলতা সেন” (সিগনেট প্রেস-সংস্করণ) ও “জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা” –এই সাতটি গ্রন্থের সমস্ত কবিতা তাে রয়েছেই, এর বাইরেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসংকলন-বই-পাণ্ডুলিপি থেকে অজস্র কবিতা সংকলিত হয়েছে ‘অগ্রন্থিত কবিতা' শিরােনামে। এই সগ্রহে কবি-প্রণীত সর্বমােট ৬০০-র অধিক কবিতা ছাড়াও আছে কবির ইংরেজি কবিতা, কবিকৃত স্বরচিত ইংরেজি কবিতার অনুবাদ, সাময়িকপত্রে প্রকাশিত তাঁর কবিতার তালিকা, কবির বিস্তারিত জীবনপঞ্জি ও গ্রন্থপঞ্জি প্রভৃতি প্রাসঙ্গিক অজস্র বিষয়। প্রস্তুতি-প্রসঙ্গ’ ও ‘জীবনানন্দ দাশের কবিতা : একটি পরিক্রমা’ নামে সম্পাদক-কৃত দু’টি দীর্ঘ রচনা জীবনানন্দের কবিতার অন্তর্লোকে আলােকপাত করবে। এই গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন দুই বাংলার শ্রেষ্ঠ জীবনানন্দ-বিশেষজ্ঞ আবদুল মান্নান সৈয়দ। এই সংগ্রহ গ্রন্থ জীবনানন্দের কবিতার আরাে অনেক নতুন মাত্রা ও নতুন আয়তন যােগ করবে। জীবনানন্দ দাশের এই সমগ্র কবিতার সংগ্রহ কবি। জীবনানন্দ দাশকে সম্পূর্ণভাবে বুঝে নেওয়ার ক্ষেত্রে কাব্যপাঠক-ছাত্র-শিক্ষক সমালােচক-গবেষক সকলের জন্যেই অপরিহার্য।
আবদুল মান্নান সৈয়দ (৩ আগস্ট ১৯৪৩ - ৫ সেপ্টেম্বর ২০১০) বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাহিত্য-সম্পাদক। তিনি ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের "পোয়েট ইন রেসিডেন্স" ছিলেন। বিংশ শতাব্দীর ষাট দশক থেকে বাংলা সমালোচনা-সাহিত্যে তার গবেষণাধর্মী অবদান ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। কাজী নজরুল ইসলাম ও জীবনানন্দ দাশের উপর তার উল্লেখযোগ্য গবেষণা কর্ম রয়েছে। তিনি ফররুখ আহমদ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিষ্ণু দে, সমর সেন, বেগম রোকেয়া, আবদুল গনি হাজারী, মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী, প্রবোধচন্দ্র সেন প্রমুখ কবি-সাহিত্যিক-সম্পাদককে নিয়ে গবেষণা করেছেন। বাংলাদেশের সাহিত্যমহলে তিনি 'মান্নান সৈয়দ' নামেই পরিচিত ছিলেন।