বদলে যাচ্ছে আমাদের সমাজ কাঠামো। আধুনিক মানুষের মন ও মননেও লেগেছে দ্রুত পরিবর্তনের দোলা। চলছে ভাঙ্গা-গড়ার সুক্ষ্ম খেলা। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আটপৌঢ়ে নাগরিক জীবনের সেই সুর ও ছন্দ এখন আর নেই। এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে ঢিমেতালে চলা মধ্যবিত্ত। নানা রকম জটিলতার কারণে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হচ্ছে নানা টানাপড়েন। পাল্টে যাওয়া এই জীবনযাত্রা ও সামাজিক চালচিত্রের অন্যতম রূপকার হলেন তরুণ ও প্রতিভাবান লেখক দর্পণ কবীর। ঢাকার নাগরিক জীবনের অনেক কাহিনীর কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তিনি। ঘটনার ধারাক্রম উপলব্ধি করেছেন সন্ধানী দৃষ্টি দিয়ে। প্রবাস জীবন বেছে নেয়ার পর তিনি বিনি সূতোয় মালা গাঁথার মতো করে একের পর এক বুনে চলেছেন ফেলে যাওয়া নাগরিক জীবনের সেই আখ্যান। 'বসন্ত পথিক'-এর কাহিনী গড়ে উঠেছে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের নানা দোলাচলকে ঘিরে। মৃদুল রায়হানকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে কাহিনীর বিন্যাস। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বিন্দু, মলি, তিথি, শারমীন, আফজাল, মাহবুব, নাজমা, নীতা, সুমি, অপু, রাসেল, রাশেদ, শাহেদরা। এই মানুষগুলোর আবেগ- উচ্ছ্বাস, প্রেম, বিরহ, ভালবাসা, যন্ত্রণা, বৈষম্যগুলো নিপুণ কারিগরের মতো তুলে ধরেছেন দর্পণ কবীর। দর্পণের কলমে প্রতিবিম্বিত হয় অন্যরকম এক জীবনবোধ। রোমান্টিক এই লেখক ভালবাসার চিরায়ত মূল্যবোধে আস্থা রাখলেও তার বলার ভঙ্গিটি একদমই অন্যরকম। শব্দের বুনন চমৎকার। নির্মেদ ও ঝরঝরে ভাষা। একটা কাব্যিক মেজাজ পাওয়া। শুরু থেকেই পাঠককে অনায়াসে টেনে নিতে পারেন।
দর্পণ কবীর একজন প্রেমের কবি। তার অধিকাংশ কবিতার উপজীব্য বিষয়- প্রেম। জন্ম বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ শহরে। ছড়া ও কবিতা লেখা দিয়ে সাহিত্যচর্চার শুরু। এরপর গল্প, উপন্যাস ও গান লিখে চলেছেন। ১৯৯১ সালে তার প্রথম ছড়ার বই ‘ধপাস’ প্রকাশিত হয়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কষ্টের ধারাপাত’ প্রকাশিত হয় ২০০০ সালে। এরপর ক্রমান্বয়ে কাব্যগ্রন্থ ‘আকাশ আয়না’ (২০১২), ‘বসন্ত নয় অবহেলা’ (২০১৬), ‘গল্পটার নাম নেই’ (২০২০), ‘আশ্চর্য দুঃখগুলো কষ্ট হয়নি’ (২০২২) প্রকাশিত হয়। দর্পণ কবীরের দশটি উপন্যাস, একটি কিশোর উপন্যাসসহ কিশোর গল্প এবং রোমান্টিক গল্পের বই প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে দর্পণ কবীর সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে বসবাস করছেন। পেশায় তিনি একজন সাংবাদিক।