উচ্ছ্বাস আমি প্রোটোপ্লাজমের উত্তরসুরী এক মানব, আমি নিতীর্ক, আমি বেপরোয়া, আমি দুরন্ত বৈশাখীর গতিহীন ধারা—আমার চলার শেষ নেই, আমি প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তাল উচ্ছ্বাস জলের ঢেউ মেখে মেখে আমি সাহারা মরুভূমিতে ছুটে গেছি। সেখানে তৃষ্ণার্ত হয়ে কতোদূর পথ ধরে ধরে আবার মহাসাগরে এসে পৌঁছি, নোনাজলের মাঝে আমি অবগাহন করে তৃষ্ণা নিভারণ করি। মনে আমার অনেক বল, আমি সৃষ্টিকর্তার সকল সৃষ্টির মাঝে এক জীবাত্ম। আমার ইচ্ছাটাই সবচেয়ে বড়ো, আমার ইচ্ছা তন্বী আলোকে ঝলমল করে। সকল পাষাণভেদী অতিক্রান্ত করে দূর অ্যামাজন জঙ্গলের কাছে যাই, সত্যি কথা যেটা—ভয় লেগেছে কিছুটা—মনে মনে সৃষ্টিকর্তার ভরশা নিয়ে ঢুকে পড়ি জঙ্গলের ভেতর। সৃষ্টির রহস্যের সীমা নেই। এই অ্যামাজন জঙ্গলের মাঝে আজব রকমের মানুষ, পশুপাখি, অ্যানাকুন্ডা সাপ—৬ ফুট চওড়া, ৬২ ফুট লম্বা। ৫/৬ ফুট সাইজের মাকড়সা, বাঘ সিংহ, পিঁপড়ে আর গাছ গাছালী আছে। দেখি গাছেরা ও না—কি মানুষকে খেয়ে ফেলে, আর পিঁপড়ের কামড়ে মানুষের মৃত্যু ঘটে। জঙ্গলের ভিতর দিয়ে একটি রয়েলিং রিভার প্রবাহিত আছে। এই রিভার (নদী) চূড়ান্ত ফুটন্ত পানিতে পরিপূর্ণ এটাতে নামলে বাঁচা মুশকিল। আমি আবার বুক ধড়পড় করে আমি বনমানুষের মুখোমুখি হই। আমি পরণের কাপড় দিয়ে মুখটাকে ভালো করে ঢেকে ঢেকে বাঘ, সিংহের আক্রমণ—থেকে নিজেকে উদ্ধার করি। (বরোবার পথ খুব কষ্ট করে খুঁজে নিয়ে বাহির হয়ে পড়ি। নইলে তো আমার বাংলাদেশের মতো ৩৮টি বাংলাদেশ মিলে যে এলাকা সেখান থেকে কি আর বাহির হওয়া সম্ভব? সৃষ্টির অপার মহিমা এটা কি পৃথিবীর অংশ না অন্য পৃথিবী বুঝে উঠতে পারছি না। শেষে আমি বৃহৎ জঙ্গলের একদিকে থেকে বের হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যাই, সেখানে গিয়ে আমি শান্তি স্বস্থি এবং উচ্ছ্বাস অনুভব করি। সাগরের মাতাল উত্তাল হাওয়া আর পানির মাঝে আমি অফুরন্ত অসীম শান্তি খুঁজে পাই, উচ্ছ্বাস খুঁজে পাই।