শব্দগঠনের একটি সাধারণ প্রক্রিয়া জোড়াশব্দ। বাংলা শব্দগঠনের ব্যাপারটি ঘটে সন্ধি, সমাস, উপসর্গ, প্রত্যয় ইত্যাদির মাধ্যমে। এগুলোর মধ্যে সন্ধি ও সমাসে দুই শব্দ এক শব্দে রূপান্তরিত হয়। সন্ধির ক্ষেত্রে দুই শব্দ একসঙ্গে মিশে যায়; যেমনÑ শয্যা আগত = শয্যাগত। কিন্তু সমাসের ক্ষেত্রে বর্ণে বর্ণে মিলন হয় না; পদের সঙ্গে পদের মিলন হয়। সমাসে দুটি শব্দ এক শব্দে পরিণত হওয়ার সময় পাশাপাশি অবস্থান নেয়; যেমনÑ দেশে ও বিদেশে = দেশেবিদেশে। এ—ধরনের জোড়াশব্দ একসঙ্গে ব্যবহার করাই রীতি। আলাদা করে লিখলে অনেক সময় শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটে যায়। তখন সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই ভাষার ক্ষেত্রে জোড়াশব্দ ব্যবহারের বিষয়টি জরুরি। কখনো কখনো হাইফেন (—) চিহ্ন ব্যবহার করেও জোড়াশব্দ গঠন করা হয়। যেমন— নরম—গরম ইত্যাদি। এরূপ বিশিষ্টার্থক শব্দ ও বাক্যাংশ বা বাগধারার বিশেষ গূঢ় অর্থ থাকে বলে সাধারণের বোধগম্য শব্দার্থ দিয়ে এসব শব্দের অর্থ—নির্দেশ করা চলে না। প্রবাদ—প্রবচনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এগুলো সামগ্রিকভাবে গভীর ভাবের দ্যোতক। ভাষাকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করার পাশাপাশি অর্থপূর্ণ রসমণ্ডিত করার ক্ষেত্রে ভাষায় বিশিষ্টার্থক জোড়াশব্দ, বাক্যাংশ, বাগধারা ও প্রবাদ—প্রবচন ব্যবহারের বিকল্প নেই। এরূপ কিছু নির্বাচিত বিশিষ্টার্থক জোড়াশব্দ, বাক্যাংশ, বাগধারা ও প্রবাদ—প্রবচন নিয়ে এ—অভিধান। বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎসাহী পাঠক ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চাকে নিঃসন্দেহে সমৃদ্ধ করবে অভিধানটি।
জন্ম : ১৮ এপ্রিল ১৯৫৯, জন্মস্থান : সিলোনীয়া, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম। শিক্ষা : ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর (১৯৮৩), কর্মজীবন : বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর প্রকাশনা বিভাগে কর্মরত।