কাগজ হল মানুষের মনের অভিব্যক্তি প্রকাশের একটি অন্যতম মাধ্যম। বই -খাতা, ব্যাংকের চেক, টাকার নোট, কার্টুন বক্স, এনভেলাপ, খবরের কাগজ, শপিং ব্যাগ ইত্যাদি তৈরি করতে কাগজ ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন কালে মানুষ লিখার জন্য গাছের ছাল, পাতা, পশুর চামড়া ইত্যাদি ব্যবহার করতো। আর বর্তমানে এসবের বিকল্প হিসাবে কাগজ ব্যবহার করা হয়। কাগজ আসলে একটি সমতল বস্তুর আবরন, যা মূলত গাছের ফাইবার থেকে তৈরি হয়। উৎপাদনের সময় এর সাথে বিভিন্ন পরিমানে ফিলার, রং, পুরাতন কাগজ ইত্যাদি দেয়া হয়। পেপার মিলে, গাছের গুড়ি (পাল্প) অথবা পুরাতন ব্যবহৃত কাগজ থেকে পেপার মেশিনের মাধ্যমে বিশেষ ভাবে প্রসেস করে নতুন কাগজ তৈরি করা একটি শৈল্পিক কর্ম। বর্তমানে বাংলাদেশে ১০০টি পেপার মিলে বছরে ২ – ২.৫ মিলিয়ন টন কাগজ উৎপাদন হয় কিন্তু বাংলাদেশে পেপার মেকিং টেকনোলজি নিয়ে কোন ডিগ্রী, ডিপ্লোমা, পড়াশোনা না থাকায় আমাদের কাগজ উৎপাদন জ্ঞ্যান খুবই সীমিত। তাই এই বইটিতে কাগজ উৎপাদন প্রসেস, পেপার মেশিন, কাচামাল ইত্যাদি নিয়ে প্রচুর গবেষণামূলক তথ্য, ছবি দেয়া হয়েছে, আশা করি বইটি পড়ে সকলের জ্ঞ্যানের পরিধি আরও প্রশস্থ হবে এবং কাগজ শিল্প নিয়ে ভালো একটা ধারনা হবে। বিগত ১৪ বছর এই শিল্পের সাথে থেকে প্রাপ্ত ক্ষুদ্র জ্ঞ্যান, কিছু বিদেশী বই, আর্টিকেল অনুসরন করে বইটি লিখার চেষ্টা করেছি। অনুরোধ করব, এই বইয়ের সকল তথ্যকে প্রাথমিক ধারণা হিসাবে নিতে। বইটিতে কোন ভুল থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে অনুরোধ করছি।